আশাহীদ আলী আশা ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জে মধ্যরাতে গিয়ে ৫ লাখ টাকা না দিলে নাইন মার্ডার মামলায় এক ইউপি সদস্যকে ফাঁসিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি সদস্য আজিম উদ্দিন।
বুধবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনে সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত অভিযোগ করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য উপজেলা জাসাসের যুগ্ম আহবায়ক এবং ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আজিম উদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে আজিম উদ্দিন বলেন- গত ৮ জানুয়ারি রাত অনুমান ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ১৪-১৫ জন মানুষ আজিম উদ্দিনের বাড়ির গেইটে সজোরে ধাক্কা-ধাক্কি করে। বিকট আকারে শব্দ হওয়ায় আজিম উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বিকট আকারে শব্দ হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন সৌদি ফেরত আজিমের বড় ভাই। এতে আজিম উদ্দিন আতঙ্কিত হয়ে তাঁর আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করেন। এসময় আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী আজিম উদ্দিনকে দরজা-গেইট খুলতে বারণ করে। এক পর্যায়ে আজিম উদ্দিনের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে যোগাযোগ করলে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি কর্তৃপক্ষ জানায় আজিমের বাড়িতে পুলিশ আসার কোনো তথ্য পুলিশের কাছে নেই। পরে আরও আতঙ্কিত হয়ে ডাকাত এসেছে মনে করে গ্রামের মসজিদে ডাকাত আসার বিষয়ে মাইকিং করান আজিম উদ্দিন।
মাইকিংয়ের পর আজিম উদ্দিনের আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে আজিম উদ্দিনের বাড়িতে আসলে আজিম উদ্দিন ঘরের দরজা খুলে দেখতে পান এলাকার মানুষ ও নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১৪-১৫ জন পুলিশ তাঁর ঘরের গেইটের সামনে দাড়িঁয়ে আছেন। পরে আজিম উদ্দিন ঘরের বারান্দার ভিতরে অবস্থান করেন ও বাহিরের অংশে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. কামাল হোসেন অবস্থান করেন। একপর্যায়ে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে আজিম উদ্দিনকে আলাদা ডেকে নিয়ে গিয়ে ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন- আমাকে ডাকাত বানিয়ে মাইকিং করিয়েছেন, ৫ লাখ টাকা দিয়ে দেন, আমি চলে যাবো, টাকা না দিলে আপনাকে (আজিম উদ্দিনকে) নাইন মার্ডার মামলায় ফাঁসিয়ে দেবো। পরে আজিম উদ্দিন ওসিকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে গ্রামবাসীর উপস্থিতি আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেতে থাকলে নবীগঞ্জ থানার ওসি কামাল হোসেন চলে যান।
সংবাদ সম্মেলনে আজিম উদ্দিন আরও বলেন- তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অন্যায়ভাবে আজিম উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে হয়রানী করা ও হুমকি দেয়ার ঘটনায় নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান ও সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।