বিকাল বার্তা প্রতিবেদক >>
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে ১৬ জন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীকে আটক করেছে এলাকাবাসী। পরে পরিবারের লোকজনকে ডেকে এনে তাদের উপস্থিতিতে ৮ তরুণ-তরুণীকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৩টি বিয়েতে জনের ১০ লাখ করে ৩০ লাখ টাকা দেনমোহর বিয়ে দেয়া হয় এবং একটি বিয়েতে ১২ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
জানা যায়, রোববার (১৯ডিসেম্বর) দুপুরে পার্কটির কয়েকটি কক্ষ থেকে ১৬ জন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে উত্তেজিত জনতা পার্কটি ভাঙচুর করেন। এরপর স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে গন্যমান্য ব্যক্তিরা তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকদের এনে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হয়।
বিয়ে দেয়া চারজনের মধ্যে -সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ, ওসমানীনগর উপজেলার বাসিন্দা রয়েছেন। এছাড়া বাকী ৮ জনকে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ সুরমার সিলাম এলাকার রিজেন্ট পার্ক এন্ড রিসোর্টে শুরু থেকেই অসামাজিক কার্যকলাপ সংঘটিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এটি নামে পার্ক হলেও রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি বিশ্রামের কক্ষ। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও প্রেমিক-প্রেমিকারা এসব কক্ষ ভাড়া নিয়ে নিরাপদে অসামাজিক কার্যকলাপ করেন। এ সুযোগে পার্ক কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দিন-দুপুরে অন্তত ১৬ ছেলে-মেয়ে কয়েকটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কাজ চালাতে থাকেন। খবর পেয়ে দুপুরে ২টার দিকে স্থানীয়রা এসে পার্কে হানা দিয়ে তাদের কক্ষের ভেতরেই আটক করেন। আটককৃদের ছেলে-মেয়েদের বয়স ১৬ থেকে ২১ বছরের মধ্যে বলে তারা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
এদিকে, অসামাজিক কার্যকলাপের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা রিসোর্টে ভাংচুর করে।
এই ঘটনার খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি হাজী তাজুল ইসলাম তাজুল, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সভাপতি আবেদ রাজা, বিশিষ্ট মুরব্বি ফজলু মিয়া, শফিকুল হক শফিক, ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলাম মাসুম, উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রাসেল আহমদ ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সালেহ আহমদসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ওই তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকদের ডেকে ওইদিন সন্ধ্যায় বিয়ের ব্যবস্থা করেন।
অন্যদিকে, ঘটনার পর সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রিজেন্ট পার্কের ফেসবুক পেইজে পার্কটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এবিষয়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি হাজী তাজুল ইসলাম তাজুল বলেন, খবর পেয়ে মুরব্বিয়ানদের নিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে আটক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের এনে আটজনকে বিয়ে পড়িয়ে দেই ও বাকীদের পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেই।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সভাপতি আবেদ রাজা বলেন, এলাকায় একটি রিসোর্ট হয়েছে এটা অবশ্যই ভালো, কিন্তু রিসোর্টের আড়ালে যে অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে সেটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি এইরকম ঘৃন্য কাজের নিন্দা জানান।
এব্যাপারে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানাপুলিশ যায়। তবে স্থানীয় মুরুব্বিরা তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকদের ডেকে তাদের জিম্মায় দিয়ে দেন। তবে তিনি বিয়ের বিষয় সম্পর্কে জানেন না বলে জানান।