নিজস্ব প্রতিনিধি>> সিলেটে রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল উদ্দিন বলেছেন, রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের ব্যাপারে আমার কাছে কেউ চাঁদাদাবী করেনি।
মিডিয়াতে চাঁদাদাবীর বিষয়ে তিনি কোন বক্তব্যও দেন নাই। মিডিয়াতে কিভাবে কথা বলতে হয় তাও তিনি জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, তাজুল ইসলামকে আমি কখনও চাঁদাবাজ হিসেবে পাই নাই, বরং উনি আমাকে সব সময় সহযোগিতা করেছেন।
হেলাল উদ্দিন আরো বলেন, আমিও একজন বিএনপি সমর্থক, কলেজ জীবন থেকে বিএনপি সমর্থন করে আসছি। তিনি বলেন, বিভিন্ন মিডিয়া থেকে ফোন করে তাজুল কত টাকা চাঁদা চেয়েছে এ রখম প্রশ্ব করা হলে আমি বলি তাজুল আমার কাছে কোন চাঁদা চায় নি। এক সময় তিনি অতিষ্ট হয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।
তিনি রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের পুর্বের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, আমি লজ্জিতবাবে বলছি এখন থেকে রিসোর্ট ব্যবসা আর করব না রিসোর্ট বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ঘটনার পরে নিরাপত্তার জন্য তাজুল ইসলাম থাকে পুলিশ পাহারায় চন্ডিপুল পর্যন্ত পৌছে দেন।
হেলাল উদ্দিন বলেন, এত কিছু পর আমি কেন তাজুল ইসলাম বা অন্য কাউকে চাঁদাবাজ বলব? তিনি বলেন, আমার জানামতে যে কোন ঘটনা ঘটলে থানায় জিডি করতে হয়। আমি জিডি করার জন্য থানায় গেলে আমাকে এসমস্হ ঘটনায় জিডি হয়না বলে জানানো হয়।
হেলাল উদ্দিনকে বলা হয় মামলা করার জন্য। তিনি মামলা করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে এসএমপির পুলিশ কমিশনার হেলাল উদ্দিনকে ডেকে পাঠান। হেলাল উদ্দিন পুলিশ কমিশনারের সাথে দেখা করলে তাকে মামলা দায়েরের জন্য চাপ দেন বলে সভায় বলেন।
তার ভাষ্যমতে পুলিশ কমিশনার বলেন, মন্ত্রনালয় থেকে নাকি চাপ এসেছে মামলা দায়ের করার জন্য। উত্তরে হেলাল উদ্দিন বলেন আমি মামলা করতে রাজি নই। তখন পুলিশ কমিশনার তাকে বলেন, আপনি মামলা দেন, পরে না হয় মামলা তুলে নিবেন।
আসামী আমরা ফুটেজ থেকে পাব। এরখম তাকে মামলা করতে বাধ্য করা হয় বলেও তিনি জানান। মামলায় আসামীর নাম উনারা দিয়েছেন, আমি আসামী চিনি না।
সভায় উপস্হিত সাংবাদিকরা চাঁদাদাবীর ব্যাপারে মিডিয়াতে কোন বক্তব্য দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্ন করলো জবাবে হেলাল উদ্দিন বলেন নি:সন্দেহে না। আমি এরখম কোন বক্তব্য দেই নাই।
তিনি সাংবাদিকদের কাছে পুরো ঘটনার জন্য এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চান। মামলা তুলে নেয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের তিনি জানান, এলাকাবাসীর মাধ্যমে ঘটনার সমাধান হয়ে গেলে মামলা প্রতাহার করব।
রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এলাকার যুবসমাজ যে পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়টা কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে হেলাল উদ্দিন বলেন, যুব সমাজ যদি প্রশাসনের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতেন তাহলে আমার জন্য ভাল সবার জন্য ভাল হত।
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে হেলাল উদ্দিন বলেন, আমার সাথে সিলাম এলাকাবাসীর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের।
২৪ জানুয়ারী শুক্রবার রাতে রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের ঘটনায় হেলাল উদ্দিনের দায়ের কৃত মামলার প্রতিবাদে সিলামের ৯ পাড়ার লোকজন সিলাম ঈদগাহ ময়দানে সভার আয়োজন করেন।
উক্ত সভায় রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের মালিক মঞ্জু চৌধুরী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল উদ্দিনকে দাওয়াত দেয়া হয়। মঞ্জু চৌধুরী সভায় উপস্হিত না হলেও তার সম্মতিক্রমে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল উদ্দিন সভায় উপস্হিত হয়ে এসব কথা বলেন। এলাকার প্রবীন মুরব্বী ও যুব সমাজ সভায় উপস্হিত ছিলেন। সভায় সে দিনের ঘটনার মুল তথ্য তুলে ধরা হয়।
হেলাল উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, ঘটনার দিন আমি নিজে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি তাজরুল ইসলাম তাজুল ভাইকে ফোন দিয়ে বিষয়টি দেখার জন্য বলি এবং পরে আমি নিজে ঘটনাস্হলে উপস্হিত হই।
উল্ল্যেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারী মোগলাবাজার থানাধিন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সিলামের রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
এ সময় অসামাজিকতার অভিযোগে রিসোর্টে অবস্থান করা ১৬ তরুণ-তরুণীকে আটক করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। পরে তাঁদের মধ্যে চারজনকে অভিভাবক ডেকে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদের অভিভাবকদের জিম্মায় সামাজিকভাবে বিয়ের আয়োজন করার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।