চকরিয়া(কক্সবাজার)প্রতিনিধি:
জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতাপশালী নেতা আবু তৈয়বকে রক্ষা করতে মরিয়া মাতামুহুরী উপজেলা বিএনপির দু’সহোদর নেতা।
জানাগেছে, চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী গ্রামের মোঃ আবু তৈয়ব সদ্য সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য, মাতামুহুরি থানা আওয়ামিলীগ এর সাবেক কোষাধ্যক্ষ এবং মাতামুহুরি উপজেলা বিট পুলিশিং এর সাবেক কোষাধ্যক্ষ। ক্ষমতার আমলে তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ। তার আপন দুইভাই বর্তমানে বিএনপি’র গুরুত্বূর্ন পদে রয়েছেন। এরা হলেন-মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা যুবদলের সহসভাপতি মোকাদ্দেস, সাহারবিল ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি নুরুল আজম।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন- পতিত সরকারের দোসর মোঃ আবু তৈয়বকে মামলা-হামলা থেকে রক্ষা করতে মরিয়া হয়েছেন বিএনপির ওই দুই সহোদর মোকাদ্দেস ও নুরুল আজম। গত ৫ আগস্টের পর চকরিয়া থানা ও চট্টগ্রামের একাধিক থানায় দায়ের করা মামলার আসামী দোসর আবু তৈয়ব এখনো ধরা-ছোয়াঁর ভাইরে আছে।
অভিযোগ উঠেছে, তার অপর দুইসহোদর বিএনপি নেতার প্রভাবেই রেহাই পাচ্ছেন আবু তৈয়ব। ফলে তার বিষয়টি টক অব দ্যা চকরিয়ায় হয়েছে।
খোজঁ নিয়ে জানাগেছে, আবু তৈয়ব
প্রকাশ ( কাঁকড়া ) তৈয়ব আওয়ামী সরকারের আমলে পতিত সরকারের এমপি জাফরের ছত্রছায়ায় চোরাই ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা অপকর্ম করেছে।
জেলা পরিষদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে আবু তৈয়ব অনুদানের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলেও অভিযোগ। এছাড়া চৌয়ারপাড়ি বাজার সহ দেড় থেকে দুই হাজার একর মৎস্য ও লবণ চাষের জমি বর্তমানে তার দখলে, সকল দূষ্কর্মের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তার দুই ভাই সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ও বর্তমান জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদের নাম ব্যবহার করে আসছে। এমনকি সদ্য প্রত্যাহারকৃত চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি ) মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া আবু তৈয়ব ও তার দুই ভাইয়ের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে জি.আর ৪৩৯ /২৪ / ইং (চক:) মামলা ধারা ১৪৩,৪৪৭,৩২৩,৩০৭,৩৭৯,৩৮২,৩৮৬,৫০৬ (২), ৩৪ পেনাল কোড। তাতে আবু তৈয়ব ৩ নং আসামী। একইভাবে মো: আবু তৈয়ব এর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় জি.আর ৪৩১ /২৪ ইং মামলায় ১৯৮ নং আসামী, ধারা ১৪৩,৪৪৭,৪৪৮,৩২৩,৩২৪,৩২৬,৩০৭,১০৯/৩৪ পেনাল কোড। চকরিয়া থানায় জি.আর ৪৯২/২৪ ইং মামলা রুজু আছে। ধারা ১৪৩,৪৪৭,৪৪৮,৩২৩,৩৭৯,৩৮৫,৫০৬ পেনাল কোড। ইতিমধ্যে মো: আবু তৈয়ব তার দুই ভাই মোকাদ্দেছ ও নুরুল আজমের প্রভাব খাটিয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির মান্যবর সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ সাহেবের নাম ব্যবহার করে উপরোক্ত সকল মামলায় আসামী থাকার পরও আসামীগণ অদৃশ্য কারণে অদ্যবদি গ্রেপ্তার হয়নি।
বিভিন্ন মামলায় থানা কর্তৃপক্ষকে বশে নিয়ে তদবির করে আসতেছে,বর্তমানেও চকরিয়া থানার নতুন ওসি কে বশে আনার পাঁয়তারায় লিপ্ত আছে, সুত্র জানায়, আবু তৈয়ব ও তার দুই ভাই জি.আর ৪৩৯/২৪ ইং (চক:) মামলাটি (এফআরটি) দাখিলের জন্য বারবার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে চাপ সৃষ্টি করে আসছে। কিন্তু ইতিমধ্যে সূত্রোক্ত মামলার ৭ নং ক্রমিকের আসামী হামিদুল হক মানিক পুলিশ কর্তৃক ধৃত হয়ে দীর্ঘ ৩ মাস ১৫ দিন পর মহামান্য হাইকোর্ট হতে ১ বছর মেয়াদের জন্য জামিনে মুক্তি দেন এবং ২ নং আসামী আব্দু শুক্কুর ( এম ইউ পি ), ৪ নং আসামী মো: মোজাম্মেল ( এম ইউ পি ),৫ নং আসামী মামুন, ৬ নং আসামী জয়নাল আবেদীন, ৯ নং আসামী আফাজ উদ্দিন,১০ নং আসামী আব্দুল কাদের ফয়সাল, ১২ নং আসামী গিয়াসউদ্দিন, ১৪ নং আসামী নাজেম,১৫ নং আসামী রুবেল,সূত্রোক্ত মামলায় মহামান্য হাইকোর্ট হইতে ৬ সপ্তাহর রোড পার্মিড নেয়। উক্ত মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন পূর্বক জামিনের আবেদন করিলে আদালত সূত্রোক্ত মামলার সত্যতা থাকায় সকল আসামীর জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আসামিদেরকে জেল হাজতে প্ররণের পর আবু তৈয়ব, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ( বাবলা ) ও সাবেক এমপি জাফর আলম প্রকাশ: বাইট্টা জাফর সূত্রে ঐ মামলার বাদিগণকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল।আবু তৈয়ব প্রকাশ: কাঁকড়া তৈয়ব আওয়ামী সরকারের আমলে চিংড়ি, লবণ, চোরাচালান অবৈধ গরু ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি,সেন্ডিকেট বাণিজ্য সহ ইত্যাদি কর্মকান্ডের মাধ্যমে অবৈধ কোটি কোটি টাকার মালিক। বিভিন্ন স্থানে শত একর জায়গার মালিক। বর্তমানেও আওয়ামিলীগ এর দোসর আবু তৈয়ব, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ( বাবলা ), জাফর আলম গং এখনো চকরিয়ার বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে আবু তৈয়ব এর মাধ্যমে জায়গা জমি দখল করে রেখেছে।
বিগত ১৭ বছর স্বৈরাচারির দল আওয়ামিলীগ ক্ষমতা থাকাকালীন সময়েও থেমে ছিলো না তাদের কুকর্ম। চাঁদাবাজি,টেন্ডারবাজি,চিংড়ী ঘের দখল ও ভূমিদস্যুতায় তাদের ছিলো না কোন বাঁধা, তাদের রয়েছে আলাদা আলাদা দস্যু বাহিনী । ৫ আগষ্টের পর আওয়ামিলীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও তাদের কুকর্ম যেন থেমে নেই, একাধিক মামালায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি থাকার পরেও অদ্যবদি কে বা কাহার অদৃশ্য প্রভাবে দায়েরকৃত জি.আর ৫১/২৫ ইং (চক:) মামলায় এই কুখ্যাত আবু তৈয়ব আওয়ামী দোসর সূত্রোক্ত মামলায় ৬ নং সাক্ষী এবং উক্ত মামলার ঘটনাস্থল চকরিয়া থানাধীন শাহারবিল ইউনিয়ন এর কোরালখালী ৯ নং ওয়ার্ড এর সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব আবু তৈয়ব এর বাড়ির সামনে। কেমনে কিভাবে কোন অদৃশ্য শক্তিতে অদ্যবদি তার যাবতীয় অপকর্ম চলমান আছে এমন প্রশ্ন জনমনে।