কে এম বেলাল প্রতিনিধি পাথরকাটা, বরগুনা।
বরগুনার পাথরঘাটায় জেলের জালে ধরা পড়েছে ৩৪ কেজি ওজনের বিশাল আকৃতির ১টি ভোল মাছ। মাছটি মন প্রতি ১২লক্ষ ১০হাজার টাকা দাম থাকলেও বিক্রি হয়েছে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার (২৫শে মার্চ) সকালে দেশের বৃহত্তর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটা (বিএফডিসি) আলম মিয়া নামে এক ব্যক্তির আড়তে মাছটি বিক্রি হয়। এর আগে ২০শে মার্চ পাথরঘাটার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির এর মালিকানাধীন এফবি সাইফ-২ ট্রলারের জালে মাছটি ধরা পড়ে।
এফবি সাইফ-২ ট্রলারের মাঝি জামাল বলেন,গত বৃহস্পতিবার ট্রলারে বাজার সদাই করে ১৫ জন স্টাফ নিয়ে মাছ শিকারের জন্য সাগরে যাই। সাগরে গিয়ে প্রথমে দুই-তিন দিন জাল ফেললে দুই একটি ছোট ও মাঝারি আকৃতির আমাছা মাছ পেলেও বড় আকৃতির কোন মাছ জালে দেখা মেলেনি। সর্বশেষ রবিবার পুনরায় আবার সাগরে জাল ফেললে জাল তুলতে গিয়ে দেখি বড় আকৃতির ৩৪ কেজি ওজনের এই ভোল মাছটি জালে বেজেছে। মাছটি পেয়ে আমি সহ আমার ট্রলারের স্টাফরা সবাই আনন্দিত।
তিনি আরও বলেন,দেশে এখন অবৈধ ট্রলিং জালে সয়লা। দেশে এই অবৈধ ট্রলিং জাল হওয়ার আগে এমন বড় আকৃতির মাছ জালে কুড়িতে কুড়িতে পেতাম কিন্তু এখন দেশে অবৈধ ট্রলিং জালে নির্বিচার ছোট ছোট পোনা মাছ মেরে ফেলার কারণে সাগরে বড় মাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সরকার যদি অবৈধ ট্রলিং জাল বন্ধ করে দেয় তবে সামনের দিনে সাগরে ইলিশ সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা যেমন বাড়বে তেমনি এ ধরনের বড় বড় মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়বে।
আড়তদার আলম মিয়া বলেন, ট্রলারটি ৫ দিন সাগরে অবস্থান করার পর আজ পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র(বিএফডিসি) আসে। এখানে আসার পর শিকারকৃত মাছ বিক্রি জন্য আমার আড়তের চটে উঠালে তার সাথে সাড়ে ৩৪ কেজি ওজনের একটি ভাজা ভোল মাছ উঠায়। ভাজা ভোল মাছটি আড়তের চটে উঠিয়ে বিক্রি জন্য হাঁক ডাক দেই। হাঁক ডেকে মাছটি ১২ লক্ষ টাকা মন ধরে বিক্রি হয়। পরবর্তীতে মাছটি কাটার পর পুরুষ মাছ না হওয়ায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দরে মৎস পাইকার ব্যবসায়ী হানিফ মিয়া কিনে নেন। আর এই খবর পাথরঘাটায় ছড়িয়ে পড়লে মাছটি একনজর দেখতে এখানকার জনসাধারণ ভিড় করে।
মৎস্য পাইকার মোঃ হানিফ মিয়া বলেন, মাসটি পুরুষ মাছ হলে ১২ লক্ষ টাকার উপরে দাম ছিল। তবে মাছটি কাটার পর পুরুষ মাছ না হওয়ায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ধরে মাসটি ক্রয় করি তারপরও চট্টগ্রাম চালান দিলে অনেকটা লাভবান হওয়া যাবে।
এ বিষয় পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম বলেন, এই ভোল মাছ বিদেশে ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। তাই মাছটির চাহিদা ও দাম সব সময়ই বেশি থাকে।জেলেরা যদি সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ শিকার এবং অবৈধ জাল দিয়ে পোনা মাছ নিধন বন্ধ রাখে তবে সামনের দিনে এমন বড় মাছের সংখ্যা সাগরে বাড়তে থাকবে।