অনলাইন ডেস্ক:দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকর ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে, এমন বই যদি বইমেলায় আসে তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ উপলক্ষে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সম্পর্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
বইমেলাকে কেন্দ্র করে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে তল্লাশি দল থাকবে, সন্দেহভাজন কিছু দেখলে তারা তল্লাশি করবেন। মূল মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের আগে প্রতিটি প্রবেশপথে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে।
এছাড়া কাউকে সন্দেহ হলে তাকে পৃথক কক্ষে নিয়ে তল্লাশি করা হবে। মেলা প্রাঙ্গণসহ আশেপাশের এলাকার প্রতিটি ইঞ্চি সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকধারী সদস্য মোতায়েন থাকবেন। মেলার আশপাশে মোটরসাইকেল ও গাড়ি টহল থাকবে।
সিটিটিসি, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইম সিন ভ্যান, সিটি এসবি ও ডগ স্কোয়াড সদস্যরা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন বলেও জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, মেলায় নিশ্ছিদ্র পুলিশি নিরাপত্তার বাইরেও ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার থাকবে, ব্লাড ব্যাংক থাকবে, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা ও শিশু হারিয়ে গেলে তাকে খুঁজে দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকর বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে, মেলায় এমন কোনো বই প্রকাশিত হলে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিভিন্ন সময় বেশ কিছু বইয়ের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে পুলিশ। বইয়ের বিষয়টি বাংলা একাডেমি করে থাকে। তবে এমন কোনো লেখা বা বিষয় যদি পাঠকের নজরে আসে বা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং সেটি নিয়ে যদি কোনো সমালোচনা হয়, তখন পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
এবার মেট্রোরেলের জন্য মেলায় দর্শনার্থী বাড়বে বলে মন্তব্য করে হাবিবুর রহমান আরও বলেন, এবারের মেলায় বিশেষ একটি সুবিধা যুক্ত হয়েছে। মেট্রোরেলের একটি স্টেশন মেলার গাঁ ঘেঁষে। তাই দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধা বাড়বে। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের দিকের গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশ সহজ হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট পাঁচটি গেট থাকবে। প্রত্যেকটি গেট থেকেই মেলায় প্রবেশ এবং বের হওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া নারী-পুরুষের জন্য আলাদা গেটের ব্যবস্থা থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বইমেলা অসাম্প্রদায়িক আয়োজন। এই আয়োজনকে বিভিন্ন সময় হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। এখানে নাশকতা ও জঙ্গি তৎপরতার অতীত ঘটনা রয়েছে। এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে মাথায় রেখে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।
তবে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্টলগুলো পরিদর্শন করেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।