বিকাল বার্তা ডেস্ক:
ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উপদেষ্টা পদে আসার কারণে নূর জাহান বেগমের প্রভাব অনেক বেশি। যেহেতু সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হবে না তাই এটিকে চাপা দেয়ার জন্য কয়েকটি নজিরবিহীন কূট-কৌশল অবলম্বন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ সংক্রান্ত নথি চালাচালি এবং প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে। গত ১০ জানুয়ারি সাইদুর রহমানের চাকরির বয়স শেষ হওয়ার পর কেউ বুঝে উঠতে পারছিলেন না, তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাচ্ছেন নাকি নতুন কাউকে এই পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। যদিও সাইদুর রহমান নিয়মিতই অফিস করছিলেন এবং সচিব হিসেবে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বস্তুত তলে তলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আদেশ জারি হয়েছিল যথাসময়েই এবং তা চেপে রাখা হয়েছিল। ওই প্রজ্ঞাপন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়নি, এমনকি সংবাদমাধ্যম বা অন্য কারো হাতে যাতে জিও’র কপি না যায় সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
শুধু তাই নয় অবাক করার মত ঘটনা হলো, আওয়ামী এই আমলার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকে চাপা দিতে গিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আরো কিছু অপকর্মের আশ্রয় নিয়েছে, যার নজির অতীতে নেই। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের যে তালিকা রয়েছে তাতে সচিবদের তালিকায় সাইদুর রহমানের নাম নেই বর্তমানে, যদিও নিয়ম অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত অন্য সবারই নাম তালিকায় আছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কর্মকর্তাদের নাম এবং পদের পাশে ‘চুক্তিভিত্তিক’ কথাটি উল্লেখ রয়েছে তালিকায়। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব হিসেবে সাইদুর রহমানের নাম ওই তালিকায় ছিল। তবে তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের পর সেই তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে, যদিও নিয়ম অনুযায়ী এটা হওয়ার কথা ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী তালিকায় নাম ও পদের পাশে শুধুমাত্র ‘চুক্তিভিত্তিক’ কথাটি যুক্ত হতো। কিন্তু তা না করে যাতে কেউ বুঝতে না পারেন সাইদুর রহমান চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে সচিব পদে আছেন, এ কারণে নামটি তালিকা থেকেই কেটে দেয়া হয়। এ সম্পর্কিত আরো ভয়াবহ তথ্য হলো- সাইদুর রহমান এখন যে স্বাস্থ্য সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত আছেন সে কথা উল্লেখ নেই তাঁর পিডিএস (পার্সোনাল ডাটা সিট)-এ।
যদিও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত অন্য সবারই পার্সোনাল ডাটা সিটে চুক্তিভিত্তিতে কর্মরত থাকার তথ্য রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, সাইদুর রহমানের পার্সনাল ডাটা সিটে শুধুমাত্র গত ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্য আছে। এর পরের সময়ের তথ্য নেই মোটেই। পিডিএস’র শুরুতে নামের নিচে পদবী হিসেবে লেখা আছে “সচিব (পিআরএল ভোগরত) (পিআরএল আংশিক ভোগরত)”, যা একেবারেই অযৌক্তিক-অস্পষ্ট। নিয়ম অনুযায়ী, (পিআরএল ভোগরত) এবং (পিআরএল আংশিক ভোগরত) কথা দুটি এক সঙ্গে উল্লেখ থাকার কোনো সুযোগ নেই। উপদেষ্টা নূর জাহান বেগমের আবদার ও স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়েই এমন নজিরবিহীন অনিয়ম-অপকর্মগুলো করতে হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে জনপ্রশাসনে পদায়ন-পদোন্নতিকে কেন্দ্র করে ঘুষ লেনদেনের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। সাপ্তাহিক শীর্ষ কাগজের ইতিপূর্বের একাধিক প্রতিবেদনে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ডিসি নিয়োগে অনিয়ম ও ঘুষ কেলেঙ্কারির ‘ইতিহাস’ সৃষ্টি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারকরা। মূলতঃ সেই থেকে সচিবসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ঘুষের প্রচলন হয়েছে ব্যাপকহারে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব পদে মো. নিজাম উদ্দিনের নিয়োগের ‘ওপেন-সিক্রেট’ ঘুষ লেনদেনের অভিযোগটি ছিল আলোচিত। একটি মাফিয়া ব্যবসায়ী গোষ্ঠী নিজাম উদ্দিনের জন্য ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। এছাড়া নিজাম উদ্দিনের পকেট থেকেও আড়াই কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, একজন উপদেষ্টার পিতাকে ওই আড়াই কোটি টাকা দিতে হয়েছিল। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে নিজাম উদ্দিন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব পদ থেকে আউট হন। এরপরে ওই আড়াই কোটি টাকা আদায়ের জন্য তিনি চেষ্টা চালান, যদিও তা সম্ভব হয়নি। নিজাম উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে ১০০ কোটি টাকার তথ্যটি তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি- কে দিয়েছে কে নিয়েছে।সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজ
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট। আইন উপদেষ্টা: এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা। উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন, বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম। :: বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ
The Daily BikalBarta - National Newspaper of Bangladesh