রামগড় (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি:-
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা রামগড় উপজেলা ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী গরিয়া নৃত্যদের পথ প্রদর্শন করার কালে যামিনী কুমার ত্রিপুরাকে গুরুতরো ভাবে আহত করেছে এলাকার কিছু দূর্বৃত্তকারী।
পার্বত্য জেলাগুলোতে প্রাচীনকাল থেকে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী চৈত্র মাসে চৈত্র সংক্রান্তিতে বৈসাবি (বৈসু) ও বাংলা নববর্ষ বরণ উপলক্ষে গরিয়া নৃত্য অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।এই গরিয়া নৃত্য ত্রিপুরা জাতির একটি রীতিনীতি সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানটি ১৫ চৈত্র থেকে শুরু হয়ে বৈশাখ মাসে প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় টানা একমাস চলে।গরিয়া নৃত্যটি শেষের একদিন হাতে রেখে বাকি দিনগুলো তারা বিভিন্ন পাড়ায় পাডায় গিয়ে নিজের ঐতিহ্য গুলো নৃত্যর মাধ্যমে তুলে ধরা হয় এবং নির্দিষ্ট একটি এলাকায় ও নির্দিষ্ট একটি পরিবারের আয়োজনের মধ্যে দিয়ে উৎসব অনুষ্ঠানটি পরিসমাপ্তি ঘটে। তার ধারাবাহিকে গরিয়া নৃত্য ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মানুষেরা যুগযুগ ধরে পালন ও প্রচলিত আছে।এই গরিয়া
নৃত্যের ধারায় পার্বত্য অঞ্চলে ত্রিপুরা জাতির প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জীবনযাত্রার সম্পর্কে বিস্তারিত ফুটে উঠে ও সংস্কৃতি গুলো স্মরণ করিয়ে দেয়।
এরি প্রেক্ষিতে গত ১৫ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যা ৭:৩০ ঘটিকায় রামগড় উপজেলার গরিয়া নৃত্য অনুষ্ঠানটি কালাডেবা ০৭নং ওয়ার্ড, রামগড় পৌর সভার স্বর্গীয় আলী কুমার ত্রিপুরা বাড়িতে হতে ত্রিপুরা ঐতিহ্যবাহী গরিয়া নৃত্য পরিচালনা শেষ করে পূর্ব কালাডেবা ত্রিপুরা পাড়া এলাকায় যাওয়ার সময় রাস্তায় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু দূর্বৃত্তকারী /উশৃংখলকারী গরিয়া নৃত্য
দলদের ব্যঙ্গচিত্র ও গালিগালাজ এবং পাড়ার রাস্তা দিয়ে না যাওয়ার জন্য তাদেরকে বাঁধা গ্রস্ত করে বলে জানান আহত যামিনী কুমার ত্রিপুরা।তিনি তখন কেন বা গালিগালাজ ও বাঁধা করছেন এই বিষয়ে জানাতে চাইলে জাহিদ হোসেন (পিতা মোঃ মনির হোসেন, ০৭ নং ওয়ার্ড পূর্ব কালাডেবা, রামগড় পৌর সভা)আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।হুমকি দেয়ার বিষয়টি শুনার পরও আমি সামনের দিকে হাঁটতে থাকি।পরে দাঁড়িয়ে থাকা মোঃ ইউনূস (পিতা মৃত মোঃ আবুল কালাম ভান্ডারী,গ্রাম সোনাই আগা, ০৪নং ওয়ার্ড, ০১নং রামগড় ইউনিয়নের বাসিন্দা) – উচ্চ কন্ঠ সম্প্রদায়ি ভাবে উসকানি মুলক কথা বলে এলাকার ছেলেদের উসকিয়ে দেয়।তখন ওই ব্যক্তিকে কেন বা উসকানি মূলক কথা বলছেন ভাই এই বিষয়টা বলার সাথে সাথে আমাকে জাহিদ হোসেন -(পিতা মোঃ মনির হোসেন,পূর্ব কালাডেবা ০৭নং ওয়ার্ড রামগড় পৌর সভার বাসিন্দা)এলোপাতাড়ি ভাবে মার ধর করে আর আমি মাটিতে পড়ে যায় এবং আমাকে ছেঁড়ে দেয়।তার পর মাথায় ব্যথা অনুভবটি বুঝা যায় ও কপাল থেকে রক্ত পড়তে থাকে।
তখন আমাকে হাত ধরে কয়েক জন ব্যক্তি অটোরিকশা
করে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।পরে কর্মরত চিকিৎসক জনাব মোঃ হাসান মাহমুদ ও জরুরি বিভাগের সহকারী মোঃ হারুন আহত ব্যক্তি প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং ক্ষত স্থানে ড্রেসিং, ছয়টি সেলাই করা হয়।প্রথম অবস্থায় ব্যথা অনুভব না হলোও পরে ব্যথা সারা শরীর ক্রমাগত ভাবে বাড়ে। আর আহত ব্যক্তিটি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধী।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত যামিনী কুমার ত্রিপুরাকে দেখতে আসেন – রামগড় উপজেলা পরিষদের পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী জনাব শামসুদ্দিন মিলন,ত্রিপুরা কল্যান সংসদের সভাপতি মাচাং হরি সাধন, সাধারণ সম্পাদক ও রামগড় পৌর সভার ০২নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর মাচাং শ্যামল ত্রিপুরা,রামগড় পৌরসভা ০৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিল জনাব মোঃ কাজী আবুল বাসার, রামগড় উপজেলা পরিষদের পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জনাব মোঃ মোবারক হোসেন বাদশা, রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জনাব বাবু উ কংজ মারমা,রামগড় উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ছোট ভাই এবং রামগড় উপজেলা শাখার মানবাধিকার কমিশন সভাপতি জনাব আনোয়ার তারেক সুমন সহ বিভিন্ন প্রতিনিধি বৃন্দ।
কালাডেবা কালী মন্দির কমিটির সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রতিনিধিকে জানান – পার্বত্য অঞ্চলে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও রীতিনীতি সংস্কৃতি অনুষ্ঠান এই গরিয়া নৃত্য।আমাদের পূর্ব পুরুষেরা যুগ যুগ ধরে পালন করে আসছে। এই গরিয়া নৃত্য অনুষ্ঠানটি আমাদের ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহ্যবাহী গরিয়া নৃত্য ত্রিপুরা জাতির গর্ব।তাই আমাদের সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কৃতিতে সহ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই আগামী প্রজন্মকে নিজস্ব ও ত্রিপুরা জাতি ঐতিহাসিক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রীতিনীতি, বাস্তবতা চরিত্র পরিবর্তনের দিক গুলো ফুটে তুলচ্ছে এই গরিয়া নৃত্য মাধ্যমে।বাংলাদেশ বসবাস করচ্ছি।বাংলাদেশ সরকার ও বাংলা বুকে বসবাসকারী সকল জাতির মানুষের কাছে প্রশ্ন আমাদের কি নিজস্ব সংস্কৃতি রীতিনীতি পালন করতে পারবো না?কেন বা ফেসবুকে উসকানিমূলক মিথ্যা ও বানোয়ার কথা লেখা লেখি করচ্ছে?সত্যকে লুকিয়ে কেন বা মিথ্যা প্রচার করচ্ছে?
তাই স্বাধীন বাংলার স্বাধীন দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এ-সব কার্যকলাপে সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি ব্যবস্থা গ্রহণে দাবি জানান।