স্টাফ রিপোর্টার: নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ১২০ বস্তা চোরাচালানের চিনিসহ একটি ট্রাক জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এক কালোবাজারিকে আটক করা হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে উপজেলার নাজিরপুর পশ্চিম বাজার মোড় নামক এলাকায় থেকে ট্রাকসহ এসব চিনি জব্দ করা হয়। এসময় মোঃ মহর আলী (৫২) নামে এক চোরাকারবারিকে আটক করে পুলিশ। এ সময় ইমাম হোসেন ওরফে ইঞ্জিল হক (৪২) ও কাউছার মিয়া (৪০) নামে দুই চোরাকারবারি ও ট্রাক চালকসহ তিনজন পালিয়ে যায়। ট্রাক চালকের নাম জানাতে পারেনি আটক মহর আলী। আটক মহর আলী পাশ্ববর্তী দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের মুনসুরপুর গ্রামের মুত তাজুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ জানায়, চোরাকারবারিরা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে চিনি এনে সেগুলো দেশীয় বস্তায় ভরে। পরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে বস্তাগুলো সেগুলো ট্রাকে তুলে তার ওপর থ্রিপল দিয়ে বালু ভর্তি করে জেলা শহরের দিকে নিয়ে যেতে রওনা হয়। পুলিশ বা অন্যকেউ দেখলে যেন বালুবাহী ট্রাক মনে করে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে আনা চিনি ট্রাকে তুলে তার ওপর বালু ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে চোরাকারবারিরা। এমন গোপন খবরে নাজিরপুর পশ্চিম বাজার মোড় এলাকায় অভিযান চালায় কলমাকান্দা থানার একদল পুলিশ। সন্দেহজনক ট্রাকটি থামিয়ে তল্লাশি করে বালুর নিচে থাকা ১২০ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি) চিনি পায় পুলিশ। পরে চিনিসহ ট্রাকটি জব্দ করার পাশাপাশি মহর আলী নামে এক চোরাকারবারিকে আটক করে পুলিশ। তবে চালকসহ আরও দুই চোরাকারবারি পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক মহর আলী পালিয়ে যাওয়া দুই চোরাকারবারি নাম প্রকাশ করে। তবে ট্রাক চালকের নাম জানাতে পারেনি। সেইসঙ্গে চিনিগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বরে জানায় মহর আলী। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি বালুর ট্রাকে তল্লাশি করতে গিয়ে চিনির বস্তার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরপর ওই ট্রাকে থাকা চিনি জব্দসহ একজনকে আটক করা হয়। ট্রাকটি থানায় নিয়ে বালু সরিয়ে দেখা যায়, থরে থরে সাজানো ৫০ কেজি ওজনের ১২০ বস্তা ভারতীয় চিনি অভিনব কৌশলে পাচার করছিল। এ ঘটনায় মোঃ মহুর আলী (৫২) নামে একজনকে আটক করা হলেও অজ্ঞাতনামা ট্রাকচালকসহ চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত উপজেলার ইমাম হোসেন ওরফে ইঞ্জিল হক (৪২) ও কাউছার মিয়া (৪০) তিনজন ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত মোঃ মহর আলী পুলিশ দলকে চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্তদের নামসহ জানান, কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তিনিসহ সঙ্গে থাকা সবাই ভারতীয় চিনির চালানটি ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। কলমাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ লুৎফুল হক বলেন, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে চোরাকারবারিরা এমন অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছিল। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় মহর আলীকে গ্রেফতার দেখিয়ে দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।