এম হোছাইন আলী।
(কক্সবাজার)কুতুবদিয়া প্রতিনিধি।
কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় দিন দুপুরে ব্যবসায়ীর স্ত্রী-কন্যা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টা পার হলেও কোন ক্লু পাচ্ছেনা পুলিশ। রহস্যঘেরা এই হত্যায় এখন পর্যন্ত কেউ আটকও হয়নি। দ্বীপজুড়ে চলছে নানা গুঞ্জন।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) জুমার নামাজের খানিক আগে বা সময়ে উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের আব্দুল হাদী সিকদার পাড়া শান্তিবাজারে নিজ বাড়িতে রুনা আক্তার (৪২) ও তার শিশু কন্যা ওয়াসিমা নূরে জারিয়া আক্তার (৭)নির্মমভাবে খুন হন। তাদেরকে গলার পেছন থেকে ধারালো দায়ের কোপে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
পাশের বাড়ির বাসিন্দা রুবেলের স্ত্রী হ্যাপি আক্তার জানান, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির দেয়ালের ওপার থেকে তার সাথে কথা হয় রুনার। কথা শেষে নিজ ঘরে ফিরে যান উভয়েই। বেলা দুইটার দিকে তারা জানতে পারেন মা-মেয়েকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। ঠিক কোন সময়ে তারা খুন হন কেউই আন্দাজ করতে পারছেন না। বাসার পাশেই রুনার স্বামী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নুরুল আবছার নুরুর দোকান রয়েছে। জুমার নামাজ শেষে পার্শ্ববর্তী সেলুনে বসে দোকান খোলার জন্য বাসায় দু’জন শিশুকে পাঠান চাবির জন্য। তারা বাসার ভেতরে রান্না ঘরে রক্তাক্ত মা-মেয়ের লাশ দেখে নুরুকে খবর দিলে সেখানে থেকে নুরু বাসায় এসে তার স্ত্রী-কন্যাকে মেঝেতে রক্তাক্ত পরে থাকতে দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি করা হয়। শনিবার সকাল ১১টার দিকে তাকে রিলিজ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সাবেক ছাত্রনেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেন, শান্তিবাজার এলাকায় ৩ মাসের মধ্যে প্রকাশ্যে দু‘টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। রাতভর রাস্তায় বখাটেদের উৎপাত বেশ লক্ষনীয়। চুরি, জুয়া খেলা, অনলাইন বিটখেলা, মসজিদের মাইক চুরি, ব্যাটারি চুরির ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। পুলিশি টহলের তৎপরতা না থাকায় দিনদিন আইন শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে শান্তিবাজার এলাকায়। প্রকাশ্যে এধরণের হত্যাকাণ্ড বখাটেদের কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
ঘটনার পরপরই ওই বাড়িতে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশিরা ভীড় করায় হত্যাকাণ্ডের বেশ আলামত নষ্ট হয়ে যায়। পুলিশ, নৌবাহিনী ও সিআইডির টিম ঘটনাস্থলে ছিল শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত। এএসপি (সার্কেল) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ও তথ্য জানার চেষ্টা করছেন। শনিবার লাশ দু’টির ময়নাতদন্তের শেষে দাফনের ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ দিকে পুলিশ থানায় কঠোর নজরদারিতে রেখেছেন ব্যবসায়ী নুরুল আবছারকে। তাকে বার বার জিজ্ঞাসা করছে পুলিশ। একই সাথে ব্যবসায়ীর পুত্র হেফজ পড়ুয়া ছেলে মুন্তাছিরসহ একাধিক আত্মীয়কে থানায় ডেকে তথ্য জানার চেষ্টা করছেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরমান হোসেন বলেন, মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত এখনো কাউকে আটক করা যায়নি । অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রকৃত রহস্য বের করতে তারা বিভিন্ন ভাবেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। হত্যাকাণ্ডের সময় ঘরে লুটপাটের চিত্রও চোখে পড়েছে। স্থানীয়রা কোন তথ্যই দিতে না পারায় বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ক্লু বের করতে। তবে দ্রুত তারা হত্যাকারীকে সনাক্ত করতে পারবে বলে জানান।