1. jhramjan88385@gmail.com : bbarta :
  2. muhammadalomgir350@gmail.com : Muhammad Aaomgir : Muhammad Aaomgir
  3. abrahim111099@gmail.com : Bikal Barta :
গল্পঃ কেমনে পায়ে দেই: মাজেদুর রহমান বাপ্পী - Bikal barta
৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| শীতকাল| বুধবার| রাত ৮:৫৬|
সংবাদ শিরোনামঃ
জকিগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার! আজ মতিয়ারা মুক্তার জন্মদিন মর্যাদার শোকজ খোকসা মডেল টাউনে লাশ উদ্ধারের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ২ আসামি, ভ্যান উদ্ধার শেরপুর জেলায় মিষ্টি আলু রপ্তানি হচ্ছে জাপানে পবিত্র শবে বরাত এর ফজিলত ও ইবাদত! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। আজ শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলি মামলায় বাবলু, আখতার,পিন্টু সহ ফাঁসির দন্ডীত ০৯ জনসহ ৪৭ জন খালাস পাচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মী। মুসলিম হয়েও পবিত্র কোরআন পুড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সুজন নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীকে হেলদি এবং গ্রীন সিটি রূপান্তর করতে চাই: ডাঃ শাহাদাত হোসেন সিলেটের তিন মামলায় সাবেক মন্ত্রী ইমরান গ্রেফতার

গল্পঃ কেমনে পায়ে দেই: মাজেদুর রহমান বাপ্পী

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত সময় বুধবার, জুলাই ১৭, ২০২৪,
  • 79 জন দেখেছেন

আজকে অনেক দেরি হয়ে গেলো বুঝি!সঠিক সময়ে আজ বোধ হয় মাদরাসায় পৌঁছাতে পারবো না।নানা আশংকায় মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন উকি দিচ্ছে মুত্তাকির।প্রতিদিন হাঁটতে হয় প্রায় ২ মাইল পথ।বাঁশের সাকো, তারপরে বেত বাগান! এরপর আরো ডানদিকে ১মাইল হাঁটলে তবেই আমার মাদরাসাটা।মুত্তাকী খুব ভালো ছেলে।পড়াশোনাতেও খুব ভালো।সে হিফয বিভাগের ১৭ পারায়।ওস্তাদ তাকে ভীষণ ভালো বাসে।আদর করে। গত বছরে পরীক্ষার সময় মুত্তাকির যে ডায়রিয়া। সেইটা গরমের সীজনে ছিলো।ডাইরিয়া হওয়ার কারণও ছিলো।মুত্তাকী ক্ষুধার জ্বালায় ছোট ছোট আম আর লিচুর কুড়ি খাইছিলো। খাওয়ার পরে থেকেই ডাইরিয়া।কয়েকদিন বিছানা থেকে উঠতেই পারে নাই।আর সে কারণেই পরীক্ষাটা কামাই গেছে। পাঠক ভাবছেন? কেনো অপরিপক্ত ফল খেতে গেলো মুত্তাকি! আসলে ওরা খুব গরীব! বেশির ভাগ সময়েই না খেয়ে থাকতে হয় ওদের পরিবারকে।ও কিন্তু প্রতিদিন সকালে উঠে, মাদ্রাসার উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। তাকে তো অনেক দুরে যেতে হয়!এখন শীত পড়তে শুরু করেছে, ওর খালি পায়ে হাঁটতে খুব কষ্ট হয়।তারপরও যায়।ওকে যে….যেতেই হবে।এবার ও পরীক্ষা দিবেই ভাবছে।তাই কষ্ট করেই মাদ্রাসাতে আসে। পরীক্ষা শুরু হয়ে গেলো কয়েকদিনের পরে।এবার দেখতে দেখতে পরীক্ষা শেষও হয়ে গেলো।কয়েকদিন পর রেজাল্টও হলো মুত্তাকি ফাস্ট হয়েছে।এ রেজাল্ট দেখে সবাই খুব খুশি। কেননা মুত্তাকি খুব ভালো ছেলে আগেই বলেছি। নম্র, ভদ্র।তার ফাস্ট হওয়ার খুশিতে ওস্তাদজী সকলকে বিনি দাদির দোকান থেকে ভাপা পিঠা কিনে খাওয়ালো।আর উপহার হিসেবে দেওয়া হলো মুত্তাকিকে ১ জোড়া চামড়ার জুতা।কেননা ওস্তাদ লক্ষ্যে করেছেন যে এই শীতের মাঝেও ছেলেটা খালি পায়ে আসে পড়তে।সেই দুরের পথ থেকে।বনবাদাঁড়, ঝাড় জঙ্গলের ভিতর দিয়ে।এই মুহুতে তাই ওর জুতাই বেশি দরকার। আজকের মতো পড়াশোনা শেষ করে বাড়ির পথে রওয়ানা হয় সবাই।মুত্তাকীও বাড়ির পথ ধরে চলে আর চিন্তা করে হুজুরের উপহার দেয়া জুতো আমি পায়ে পরলে কি ভালো হবে! বড় বেয়াদবি হবে।এসব চিন্তা করতে করতে বাসার কাছাকাছি আসে।তারপরে ১দিন,২দিন……….. ৪দিন হয়ে গেল আর মাদ্রাসায় আসে না।এদিকে হুজুরসহ সবাই খুব টেনশনে পরে গেলো, যে! ছেলেটার আবার কি হলো?কেন আসে না? কোনো বিপদ আপদ হলো নাকি! আসলে ভালো লোককে সবাই ভালোবাসে, আদর করে।তাঁদের অভাবে তাঁদের শুণ্যতায় তাদেরই খোঁজে। ৫দিনের মাথায় ওস্তাদ ওই মুত্তাকির খোঁজ করে এবং সবাইকে খোঁজ নিতে বলে।এদিকে বিকালের দিকে মুত্তাকির বাসার খোজ নিয়ে ওর বাসার দিকে রওয়ানা দেন হুজুর ।মুত্তাকির খোঁজ নেয়।ও…মা একি কান্ড!ছেলেটা পড়তে না গিয়ে কি এসব করছে? কি প্রিয় পাঠকেরা নিশ্চয়ই ভাবছেন কি আবার করছে? শুনলে আপনাদের স্যালুট দিতে ইচ্ছে করবে এ দরিদ্র মেধাবী ছেলেটাকে। পারলে এ রকম ছেলেদের সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েন।দেশের শীর্ষ স্থানে এরকম ছেলেদের খুব অভাব।হুম! তারপর ওস্তাদ দেখলো যে তিনি যে জুতা জোড়া উপহার হিসেবে দিয়েছেন মুত্তাকীকে। ও সেই জুতা বাসায় নিয়ে এসে সে দিন থেকে চামড়াটা খুলছে জুতার।ওস্তাত বললো বাবা তুমি জুতা কেন খুলে ফেলছো?তোমার কি উপহার পছন্দ হয়নি?মুত্তাকী ছলো ছলো চোখে তাকিয়ে বললো আমার পছন্দ হয়েছে! কিন্তু আমি আপনার দেয়া উপহার কিভাবে পায়ের নিচে দিবো!আমার বেয়াদবি মাফ করবেন হুজুর।আমি পায়ের তলায় রাখতে পারবো না।তাই তো খুল…..ছি! ওই জুতার চামড়াটা দিয়ে টুপি তৈরী করে মাথায় দিবো ভাবছি আপনার দোয়া, ভালোবাসা আমার মাথায় থাকবে তাজ হয়ে।তাই আমার ক্লাস কামাই গেছে হুজুর।ইনশাআল্লাহ আমার আগামী পরশু টুপি তৈরীর কাজ শেষ হয়ে যাবে হুজুর। তারপর থেকে যাবো মাদ্রাসায়।
একথাগুলো শুনে চোখ দিয়ে জল টুপ টুপ করে গড়িয়ে পড়ছে হুজুরের গাল বেয়ে।হুজুর মুত্তাকিকে জড়িয়ে নেন বুকে।বুক ভরে দোয়া করেন। বলেন এ বিশ্বের প্রতিটা ছাত্রের উচিত কিভাবে শিক্ষকের সম্মান করতে হয়,ইজ্জত দিতে হয় তা মুত্তাকির কাছ থেকে শেখা।ওস্তাদ বলেন বাবা তুমি একদিন জগৎবিখ্যাত আলেম হবে।অনেক বড় সম্মানের অধিকারী হবে! আল্লাহ তোমায় সম্মানিত করবেন ইহকাল ও পরকালেও।দেখতে দেখতে পড়াশোনা শেষ হয় মুত্তাকী সহ সকলের। সবাই আলাদা আলাদা হয়ে পরে। কে কথায় কি করে কেউ কারো খবর রাখে না।
তবে অনেকদিন পরে ঐ হুজুর মারা যান।তিনি বেঁচে থাকতে তা স্ত্রীর কাছে গল্প করেছিলেন মুত্তাকীকে নিয়ে ঘটে যাওয়া কাহিনিটা নিয়ে।এও বলেছিলেন তাদের মেয়ের জন্য উপযুক্ত ছেলে।আসলে কারো কোনো ভালো গুণ থাকলে সবাই তাকে ভালোবাসে। ঐ ওস্তাদ মারা যাওয়ার ৩বছর পরে মুত্তাকী জানতে পারে যে তার ওস্তাদ মারা গেছেন।তাকে যে তাঁর ওস্তাদ মেয়ের জামাই বানানোর ইচ্ছা করেছিলেন তা মুত্তাকীকে জানানো হয়।বিয়ে করে তার ওস্তাদের ইচ্ছে পুরণ করার জন্য বলা হয়।আসলে কিছু সম্মান ভালোবাসা দিনশেষে এভাবেই বুঝি ফিরে আসে।

 

শিক্ষা: আসলে যাঁরা আমাদের শিক্ষা দেন তারা সব সময় সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে সম্মানের জায়গায় থাকেন।বর্তমানে অনেকেই তাদের যথাযাথ সম্মানটা দিতে চায় না! বলে এরা তো বেতনভুক্ত টিউটর। আসলে তাঁরা জাতি তৈরীর কারিগর।তাদের মানসিকতা অনেক বড়, দেশের জন্য অনেককিছু করতে চায়!তাই তো তারা মহান পেশায় যুক্ত হয়েছেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024 bikal barta
error: Content is protected !!