নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চীনের অনুদানে নির্মিতব্য ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নীলফামারীতে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন ও শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেছেন জেলার সর্বস্তরের মানুষ। আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেক্সটাইল মিল মাঠ থেকে নীলফামারী-সৈয়দপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
উক্ত মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সাধারণ জনতা।
মানববন্ধন চলাকালে কয়েক দফা বক্তব্য দেন জেলার বিশিষ্টজনেরা।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি আ. খ. ম আলমগীর সরকার বলেন, “চীনের এই মহৎ উপহারের প্রকল্পটি নীলফামারীতে স্থাপন হলে শুধু এই জেলা নয়, আশেপাশের পাঁচটি জেলার মানুষ উপকৃত হবে। চিকিৎসার জন্য রাজধানীমুখী চাপ কমবে। আমাদের স্বাস্থ্যখাতে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে।”
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সুশাসনের জন্য নাগরিক ( সুজন) নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন,
“নীলফামারী একটি অনগ্রসর ও দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত জেলা। এখানে আধুনিক চিকিৎসা অবকাঠামো নেই। এই হাসপাতাল স্থাপন হলে বঞ্চিত মানুষের জীবনে এক নতুন সকাল আসবে।”
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, হাসপাতালটি অন্য জেলায় স্থানান্তরের অপচেষ্টা চলছে, যা নীলফামারীর সঙ্গে চরম অবিচার হবে।
তারা জানান, জেলার ভূমি, পরিবেশ ও লোকসংখ্যা—সব দিক দিয়েই নীলফামারী এই প্রকল্পের উপযুক্ত স্থান। ইতোমধ্যেই হাসপাতাল নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলার শাখার নায়েবে আমীর অধ্যাপক ড. খায়রুল আনাম সহ স্থানীয়রা।
হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,
“সারাদেশে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ছড়িয়ে দেওয়ার যে প্রয়াস, তার বাস্তবায়নে নীলফামারীর মতো জেলার প্রতি নজর দেওয়া জরুরি। উন্নত চিকিৎসার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এই হাসপাতাল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে।”
নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও সমাজকর্মী নুসরাত জাহান লিয়া বলেন, ” আমরা, এই জেলার মেয়েরা, সব সময় স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তার অভাবে ভুগি। একটি আধুনিক হাসপাতাল মানে শুধু চিকিৎসা নয়—এটা নারীর স্বাস্থ্য, মাতৃত্ব, ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তার প্রশ্ন। উন্নয়নের নামে আমাদের বঞ্চিত করা চলবে না।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের জন্য চীন সরকারের অনুদানে ১০০০ শয্যার একটি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তুতি চলছে। তবে হাসপাতালটির স্থান নির্ধারণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
নীলফামারীবাসীর দাবি, সরকারের উচিত বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং রাজনৈতিক চাপের বাইরে গিয়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া।
মানুষের মুখে মুখে এখন একটাই কথা—”আমাদের স্বাস্থ্যসেবা, আমাদের অধিকার; চীনের উপহার হাসপাতাল চাই নীলফামারীতে।”