নিজস্ব প্রতিনিধি :
আর্থিক অনিয়ম, প্রশংসাপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা সহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার হরিহরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিনুল হকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২০শে আগস্ট) সকাল ১০টায় নানান অভিযোগের প্রেক্ষিতে আন্দোলনে নামেন তারা। এসময় অন্যায় ও দুর্নীতি বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক আমিনুলের শাস্তির দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
তারা জানান, পদচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও কয়েকজন শিক্ষক সহ একটি সিণ্ডিকেট গঠন করে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি শুরু করেন প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিনুল হক। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, বিনা রশিদে অর্থ আদায়, উপবৃত্তির শিক্ষার্থী নির্বাচনে অনিয়ম সহ বিভিন্ন অপকর্ম করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রধান শিক্ষক কখনো শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাতেন না। এমনকি কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে শাস্তি দিতেন, এছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি করা সহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি আমলে নিয়ে অনতিবিলম্বে প্রধান শিক্ষকের শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা।
কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসী সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আমিনুল হক গত কয়েক মাস যাবৎ বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে উপস্থিত হন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, প্রধান শিক্ষকের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মধ্যে সর্বজন অপছন্দনীয় কাজ ছিল অভিভাবকদের সাথে দুর্ব্যবহার করা। তার কাছে ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো অভিভাবক অভিযোগ দিলে, উল্টো তাদেরকে অপমান করে তার রুম থেকে বের করে দেয়া ছিল নিত্যদিনের কাজ।
এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি অসত্য ও বানোয়াট। ব্যক্তি আক্রোশ থেকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
নিয়োগ বাণিজ্য বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি চাপে পড়ে এসব করেছি। আমাকে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করিয়ে নিতেন। আর আপনাদের এত প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারবো না। আপনারা যা করার করেন, আমার কিছুই হবে না। কারণ আমিও দলীয় লোক। নিউজ করে কি কারো চাকরি যায়। যান চলে যান আর বেশি কথা বললে এখানে বেঁধে রাখবো।”
এব্যাপারে মুঠোফোনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।