তোফায়েল আহমদ : সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো:
সিলেট, শনিবার, ২৪ অগ্রহায়ণ (০৯ ডিসেম্বর):
নারীরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা সকল ক্ষেত্রে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে। বর্তমানে আধুনিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নারীদের বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। সিলেটে শনিবার ০৯ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সিলেটের আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও জয়িতা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বকতৃতায় বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি একথা বলেন।
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ সেলিম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহিনা আক্তার, এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মণ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেট মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহিনা আক্তার।
“নারীর জন্য বিনিয়োগ, সহিংসতা প্রতিরোধ” প্রতিপাদ্যকে উল্লেখ করে বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি বলেন, নারীদের জন্য পরিবার ও রাষ্ট্র বিভিন্নভাবে বিনিয়োগ করে আসছে। পরিবার শিক্ষাসহ নানাভাবে বিনিয়োগ করছে এবং রাষ্ট্র উপবৃত্তি, বিনামুল্যে বই, বিনা বেতনে পড়াশোনাসহ অন্যান্য বিনিয়োগের মাধ্যমে নারীদের সহায়তা প্রদান করছে।
বর্তমানে নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি সেক্টরে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের স্বমহিমায়। আশাকরি আগামীতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদগুলোতেও নারীদের সমান অবস্থান থাকবে।
ধর্মীয়ভাবে নারীদের অনেক মর্যাদা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, ইসলাম ধর্মে নারীদের অনেক মর্যাদা দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক দেশ ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে নারীদের শিক্ষাসহ বিভিন্ন অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। বিশ্বের অনেক দেশে নারীদের ভোটাধিকার প্রাপ্তিতেও অনেক সময় লেগেছে। কিন্তু বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে আছে। বাংলাদেশের নারীরা শিক্ষা, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন মৌলিক চাহিদাগুলো সমানভাবে পাচ্ছেন। এমনকি নারীরা স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারও প্রয়োগ করছেন।
নারীদের নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলোকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা নারীদেরকে তাঁদের অধিকার সর্ম্পকে সচেতন করবেন। বেগম রোকেয়া যেমন তাঁর অবরোধ-বাসিনী লেখনীর মাধ্যমে নারী জাগরণের কথা বলেছেন, সমাজের কুসংস্কারকে তুলে ধরেছেন আপনারাও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজে নারীদের অবস্থান তুলে ধরবেন, সমাজের কুসংস্কার দূর করতে সরকারকে
সহযোগিতা করবেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত জয়িতাদের উদ্দেশ্য করে বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, আপনারা নিজেদের সাফল্যগুলো সমাজকে জানাবেন, সচেতন করবেন, অনুপ্রাণিত করবেন যাতে অন্য নারীরাও সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে আরো অগ্রসর হতে পারে, সমাজ ও দেশকে উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।
এ বারের আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে ৫টি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরিতে সিলেট জেলার পাঁচজন শ্রেষ্ঠ জয়িতাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর আগে “নারীর জন্য বিনিয়োগ, সহিংসতা প্রতিরোধ” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে র্যালি বের করা হয়। এতে সিলেট জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণসহ অনুষ্ঠানে আগত জয়িতাগণ অংশগ্রহণ করেন।