নিজস্ব প্রতিনিধি (দ্বীপক চন্দ্র সরকার) নেত্রকোণা: নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় আবুল কাশেম (৫০) নামে এক চোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রামের প্রায় আড়াইশো জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর, যার অনুলিপি দেয়া হয় কেন্দুয়া প্রেসক্লাব, সেনা ক্যাম্প ও কেন্দুয়া থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের ছবিলা গ্রামের মৃত শুকর মাহমুদের পুত্র আবুল কাশেম একজন সন্ত্রাসী, গরু চোর, মোটরসাইকেল চোর ও অটো চোর । তাছাড়াও সে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত । জান-মাল হুমকির মধ্যে পড়বে সেই ভয়ে গ্রামের লোকজন তার বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পায় না । এই বিবাদী এতোটাই বেপরোয়া – কোন সালিস-দরবার মানে না । এমনকি কোন ব্যক্তিকে যখন তখন খুন জখম করার আশংকা করা হয় অভিযোগে
কোন সালিস-দরবার মানে না । এমনকি কোন ব্যক্তিকে যখন তখন খুন জখম করার আশংকা করা হয় অভিযোগে । কেন্দুয়া থানায় তার নামে একাধিক মামলাও রয়েছে বলে জানায় অভিযোগকারীরা । এক পর্যায়ে গ্রামবাসীগণ দরবারে তাকে চোর সাব্যস্ত করায় সে রাত-বিরাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করে । এমতাবস্থায় প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে জেল হাজতে প্রেরণের জোর দাবি জানান গ্রামবাসী ।
সিরাজুল ইসলাম (৫৫), মোঃ আলতু মিয়া (৭০), মোঃ ইলিয়াস মিয়া (৬০), আব্দুল ছাত্তার (৭০), হাবিবুর রহমান (৬০)সহ বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলেও আবুল কাশেমর কর্মকাণ্ডে অপমান ও অতিষ্ঠ হওয়ার ক্ষোভ ওঠে আসে ।
একই গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জুর রহমান (৬০) বলেন, তার চুরি ও ডাকাতির যন্ত্রণায় গ্রামের মানুষ ঘুমোতে পারে না । গ্রামে ও গ্রামের বাইরে তার চুরির উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে থানায় অভিযোগও দেয়া হয়েছে ।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত আবুল কাশেমের মূল বাড়ি মাসকা ইউনিয়নের পিজাহাতি গ্রামে । খুব ছোট বেলায় বাবা-মায়ের সাথে মামার বাড়ি ছবিলা চলে আসেন । এখানেই স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে বিয়ে-সাদী করেন । রাজমিস্ত্রী কাজের পাশাপাশি চুরি করাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে । বিবাহিত জীবনে দুই পুত্র সন্তানের জনক । বাড়ি গিয়ে কথা হয় তার ছোট ছেলে আকাশ (১৭) ও বড় ছেলের স্ত্রী স্বপ্না (১৯) এর সাথে ।
আকাশ (১৭) ও বড় ছেলের স্ত্রী স্বপ্না (১৯) বলেন, আমাদের বাবাকে কেউ হাতেনাতে ধরেন নি । তবে সে যদি অপরাধী হয়, আমরাও চাই তার শান্তি হোক । এর জন্যে আমাদের উপর চাপ দিচ্ছে । পুকুরে গোসল ও টিউবওয়েল থেকে ভয়ে ভয়ে পানি আনতে যাই । এর আগে গোসল ও পানি আনতে নিষেধও করা হয়েছিলো । তবে এখন কোন সমস্যা নেই । আবুল কাশেম সম্পর্কে তারা আরো বলেন, প্রায় এক (১) মাস যাবত বাড়িতে নেই । কোথায় আছে জানি না ।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, অভিযোগের ব্যাপারটি অবগত আছি । তাকে গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে ।