নিজস্ব প্রতিবেদক ।
প্রিয় দেশবাসী বাংলাদেশ শস্য শ্যামলা ছয় ঋতুর দেশ। আমাদের প্রিয় এই বাংলাদেশে প্রতিবছর একটা সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হয়।
এই ঝড়ে যাদের প্রান কেড়ে নিয়েছে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি, ব্যথিত পরিবারের সদস্যরা যেন এই শোক কাটিয়ে পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে আমরা সম ব্যাথায় ব্যথিত। এখনো বন্যা কবলিত অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাণহানির নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা পাওয়া যায়নি।বিদ্যুৎ না থাকায় সকল তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। কি বলবো দুর্ভাগ্য আমাদের। অল্প অল্প সঞ্চয় করে একটি সংসার গড়ে তোলে মানুষ।গ্রামীণ জনজীবনে সাধারণ মানুষদের জীবনে চলে আসে মুহূর্তের মধ্যে স্বপ্ন ভাঙ্গার ভয়। রেমাল বেশ কিছু জেলায় লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে মানুষের স্বপ্ন। আজ সকাল থেকে কিছুটা স্বাভাবিক পরিবেশে এসেছে। আমার পরিচিত, অপরিচিত ও আমার প্রিয় প্রতিষ্ঠান খুলনা আর্ট একাডেমির সন্মানিত অভিভাবক, সকল সদস্য বৃন্দ সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। গত ২৬ শে মে রোজ রবিবার বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় রেমাল গভীর সমুদ্রে শুরু হয়েছে। উপকূলে ২৭ শে মে আঘাত এনেছে। আমি খুলনায় থাকি তাই খুলনা শহর সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি তাতে খুলনা শহরে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যারা নিচ তলায় বসবাস করেন তাদের রুমে জল প্রবেশ করেছিল এ ব্যতীত বড় কোন দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আমার বাড়ি ঝালকাঠি কোন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। শুধুমাত্র শুনেছি ঘরবাড়ি সব তলিয়ে গেছে তাই মানসিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত ছিলাম। তার মধ্যে ও শিল্পী হিসাবে যেটুকু করণীয় সেটুকু করার চেষ্টা করেছি। একজন চিত্রশিল্পী বা লেখক তারা অর্থনৈতিক সহযোগিতা না করতে পারলেও সমাজ কিভাবে ভাল থাকবে সে চিন্তাটা শিল্পীরা করেন। তাই আমার স্থান থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ঝড়ের উপর একটি গান রচনা করলাম। উক্ত গানটি বাগেরহাটের গুণী শিল্পী বাবু প্রবীর শীল সুর দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। আমি সেই গানটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপরে ছবি এঁকে ঝড়ের সময় ঝড় কবলিত এলাকার মানুষদের কি করনীয় এমন কিছু তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আমরা কেউ গ্রামে থাকা পরিবারের আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ খবর ইচ্ছা করলেও নিতে পারিনি কারণ বন্যা কবলিত অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন তাই হয়তো বা সবার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা সবাই প্রার্থনা করি আমাদের পরিবারের সদস্যরা যে যেখানে আছে সবাই ভালো থাকুক। তার সাথে আমি বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য কি করনীয় তা তুলে ধরছি।
বন্যা কবলিত অঞ্চলের মানুষদের যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতিপূরণের পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের নেওয়া সম্ভব নয়। এই পদক্ষেপ একমাত্র সরকার কর্তৃক বা বিদেশি কোন এনজিও সংস্থা নিলে হয়তো পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। কিন্তু আপনি আমি তাদের পাশে থেকে সবাইকে সহযোগিতা করা উচিৎ। আমরা সবাই মিলে স্থানীয় সরকার এর কাছে অনুরোধ করব যাদের ঘর হারিয়েছে তাদের পুনরায় সরকার কর্তৃক ছোট্ট আবাসনের সুব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাবো। রেমালে আঘাত প্রাপ্ত ব্যক্তিদের করণীয়ঃ এই দুইদিন পর্যন্ত রেমাল ঝড়ে বিভিন্ন পুকুর ডোবা এবং বিভিন্ন দূষিত স্থানের বজ্র পানির সঙ্গে মিশে পানি দূষিত হয়েছে তাই যেসব অঞ্চলে পানিতে ডুবে ছিল সেসব অঞ্চলের সকলকে অনুরোধ জানাই আপনি নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য বিশুদ্ধ পানি খাবেন। প্রয়োজনে পানি ফুটিয়ে খাবেন এবং যতটা কম পারেন বন্যার পানি ব্যবহার এবং শরীরে না লাগিয়ে থাকার চেষ্টা করুন। ঘরে ওর স্যালাইন রাখবেন এবং শারীরিক অবস্থা খারাপ মনে হলে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় ডাক্তারের কাছে চলে যাবেন।ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কেন এই আসুন সম্পর্কে একটু জানিএকটা সময় ছিলো ঘূর্ণিঝড়ের কোনো নাম থাকত না। আমাদের দেশে ১৯৭০ সালে কিংবা ১৯৯১ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেছে। কিন্তু সেগুলোর কোনো নাম নেই। তাই সঠিক দিন তারিখ গণনা করে বের করা কষ্টসাধ্যের কাজ।নাম থাকলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের , সম্পর্কে তথ্য দ্রুত জানা যায়। পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে হয় আবহাওয়াবিদদের সুবিধা হয়।
২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম নামকরণ শুরু করেছে। ১৩টি দেশ থেকে একটা একটা করে ১৩টি নাম সংরক্ষণ করে। নামকরণের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মেনে চলা হয়। যেমন রাজনীতি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি বা লিঙ্গনিরপেক্ষ হতে হবে নামগুলোকে। বিশ্বের কোনো অঞ্চলের কোনো মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে,
এমন নাম দেওয়া যাবে না। নাম রূঢ় হতে পারবে না। এটি সংক্ষিপ্ত ও সহজে উচ্চারণ করা যায়, সর্বোচ্চ আটটি বর্ণ থাকবে।রেমাল’ শব্দটি ওমান থেকে নেওয়া হয়েছে। রেমাল একটি আরবি শব্দ। এই নামের অর্থ ‘বালু’। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের আদর্শ নিয়ম অনুসারে এই নাম বেছে নেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত যেসব অঞ্চলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে সেই সকল অঞ্চলে বিদ্যুতের সুব্যবস্থা করার জন্য সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানাই ।সামনে সকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা রয়েছে তাই বিদ্যুতের সুব্যবস্থা না হলে জনসাধারন ও শিক্ষার্থীদের অনেক ভোগান্তির মধ্যে থাকতে হবে।