1. jhramjan88385@gmail.com : bbarta :
  2. muhammadalomgir350@gmail.com : Muhammad Aaomgir : Muhammad Aaomgir
  3. abrahim111099@gmail.com : Bikal Barta :
ফেতনা কি এবং তার আলামত কি কি! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। - Bikal barta
২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| গ্রীষ্মকাল| মঙ্গলবার| রাত ১২:৩৭|
সংবাদ শিরোনামঃ
জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মুমিনপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সমছু দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত!  আল্লাহ্ কে, আপনি কি তাঁর পরিচয় জানেন? হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।  সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথম কার্গো ফ্লাইট চালু। পলাশবাড়ী পৌর জামায়াতের শিক্ষা বৈঠক অনুষ্ঠিত,, ধামইরহাটে আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে ইউএনও বাগেরহাটের রামপালে কথিত ডেভিল হান্টের অভিযোগে সাংবাদিক গ্রেফতার । দোকানের টাকা চাইলেন দিনে, রাতে অন্ধকারে খেলেন মাইর  নীলফামারীর ঢেলাপীর হাটের সরকারি জমি দখলের মহা উৎসব চলেছে ভাঙ্গায় আম পাড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত-২৫

ফেতনা কি এবং তার আলামত কি কি! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত সময় শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০২৪,
  • 101 জন দেখেছেন

 

আল্লাহ তায়ালা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দুনিয়ায় শেষ নবীরূপে প্রেরণ করেছেন। তাঁর ওপর নবুওয়াতের ধারাবাহিকতার সমাপ্তি ঘটেছে। পূর্ববর্তী নবীদের ওপর তাঁর বিশেষ শ্রেষ্ঠত্ব হলো, পূর্ববর্তী নবীদেরকে বিশেষ সম্প্রদায় কিংবা বিশেষ এলাকার জন্য এবং নির্ধারিত সময়ের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের শিক্ষা ও দাওয়াত একটি নির্ধারিত সময়কাল পর্যন্ত এবং একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। যেমন, হজরত মুসা (আ.)-কে মিসর অঞ্চলে বনি ইসরাইল সম্প্রদায়ের নবীরূপে পাঠানো হয়েছে। বনী ইসরাইল সম্প্রদায় এবং মিসর অঞ্চলে তার নবুওয়াত এবং রিসালাত সীমাবদ্ধ ছিল। পক্ষান্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তায়ালা বিশেষ কোনো সম্প্রদায়, বিশেষ কোনো জাতি কিংবা বিশেষ কোনো অঞ্চলের জন্য এবং নির্ধারিত সময়ের জন্য নবীরূপে প্রেরণ করেননি। বরং পুরা পৃথিবীর জন্য, সব মানুষ ও জিনের জন্য এবং কেয়ামত পর্যন্ত সময়ের জন্য নবী বানিয়েছেন। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 

‘হে নবী, আমি আপনাকে সব মানুষের জন্য সুসংবাদদাতা এবং সর্তককারীরূপে প্রেরণ করেছি। (সূরা: সাবা, আয়াত: ২৮)।

 

এ থেকে বুঝা যায়, তাঁর রিসালাত ও নবুওয়াত আরবভূমিতে সীমাবদ্ধ নয় এবং বিশেষ কোনো যুগের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। বরং কেয়ামত পর্যন্ত আগত সব যুগের জন্য তাঁকে রাসূল বানানো হয়েছে।

 

ভবিষ্যতে সঙ্ঘটিত অবস্থাসমূহের বর্ণনা:

 

অতএব, তাঁর শিক্ষা ও তাঁর বর্ণিত বিধি-বিধান কেয়ামত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। কোনো যুগের সঙ্গে তাঁর শিক্ষা সীমাবদ্ধ নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যে শিক্ষা দান করেছেন তা জীবনের সব শাখায় পরিব্যাপ্ত। তাঁর শিক্ষার দুটি দিক আছে। একটি হলো, শরীয়তের বিধি-বিধানের বর্ণনা। যেমন, অমুক জিনিস হালাল এবং অমুক জিনিস হারাম, এ কাজ জায়েজ এবং ওই কাজটি নাজায়েজ, অমুক আমলটি ওয়াজিব, অমুক আমলটি সুন্নত এবং অমুক আমলটি মুসতাহাব। অন্যটি হলো, মুসলিম উম্মাহ ভবিষ্যতে কি ধরনের অবস্থার মুখোমুখি হবে এবং তাদের ওপরে কি কি বিপর্যয় আসবে এবং সে অবস্থায় করণীয় কি, তার বর্ণনা।

 

এ দ্বিতীয় দিকটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি ভবিষ্যতে সঙ্ঘটিত ঘটনাবলী সম্পর্কে আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞান প্রাপ্ত হওয়ার পর উম্মতকে জানিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে এই এই ঘটনা ঘটবে এবং সে অবস্থায় উম্মতের করণীয় কি তাও বলে দিয়েছেন।

 

উম্মতের নাজাতের ফিকির:

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের নাজাতের চিন্তায় সর্বদা ব্যাকুল থাকতেন। এক হাদিসে আছে,

 

‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা চিন্তান্বিত এবং দুঃখ-ভারাক্রান্ত থাকতেন। মনে হত সর্বদাই তাঁর ওপর কোনো দুঃখ ছেয়ে আছে। এটা কিসের দুঃখ? যে সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছে তাদেরকে কীভাবে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানো যায়, কীভাবে তাদেরকে ভ্রান্ত পথ থেকে সত্য-সুন্দর পথে নিয়ে আসা যায়, এটাই ছিল তাঁর চিন্তা ও দুঃখের একমাত্র কারণ। কোরআনুল কারিমে এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেই ইরশাদ হয়েছে,

 

‘লোকেরা ঈমান আনছে না বলে আপনি কি দুঃখে আত্মবিনাশী হয়ে পড়বেন? (সূরা: শুয়ারা, আয়াত: ৩)।

 

এক হাদিসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমার উম্মাহ হলো এক ব্যক্তির ন্যায়, যে আগুন প্রজ্বলিত করল এবং তা দেখে পতঙ্গসমূহ উড়ে এসে আগুনে পড়তে লাগল। লোকটি পতঙ্গগুলোকে দূরে রাখার চেষ্টা করে কিন্তু তারপরও সেগুলো আগুনে ঝাপ দেয়। এমনিভাবে আমিও তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি, তোমাদের কোমর ধরে ধরে বাঁধা দিচ্ছি কিন্তু এর পরও তোমরা জাহান্নামের আগুনে পড়ে যাচ্ছ।

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শুধু তাঁর যুগের লোকদের জন্য ফিকির ছিল তাই নয় বরং কেয়ামত পর্যন্ত আগত সব উম্মতের জন্য সমান ফিকির ছিল।

 

ভবিষ্যতে কি কি ফেতনা দেখা দেবে? তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগত লোকদেরকে সমকালীন অবস্থা সম্পর্কে সর্তক করেছেন। এ সম্পর্কিত হাদিসগুলো হাদিসের প্রায় সব গ্রন্থেই ‘কিতাবুল ফিতান’ নামে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায়ে সন্নিবেশিত হয়েছে। এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

 

‘ভবিষ্যতে তোমাদের গৃহে বৃষ্টির ফোঁটার ন্যায় ক্রমাগত ফেতনা দেখা দেবে। বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে আগত ফেতনাকে তুলনা করে দুইটি বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। এক. বৃষ্টিতে পানির পরিমাণ যেরূপ অনেক থাকে তদ্রুপ ভবিষ্যতে ফেতনার পরিমাণও হবে অনেক। দুই. বৃষ্টির ফোঁটা যেরূপ ক্রমাগত ও বিরামহীন পড়ে, ফেতনাও তদ্রুপ ক্রমাগত ও বিরামহীন আসবে। একটি ফেতনা শেষ না হতেই আরেকটি ফেতনা দেখা দেবে। দ্বিতীয়টি শেষ না হতেই তৃতীয়টি দেখা দেবে এবং এ ফেতনাগুলোর প্রভাব তোমাদের ঘরে এসে পড়বে। অন্য এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 

অচিরেই আঁধার রাতের অন্ধকারচ্ছন্নতার মতো ফেতনা দেখা দেবে। অর্থাৎ অন্ধকার রাতে যেরূপ মানুষ রাস্তা খুঁজে পায় না, তদ্রুপ ফেতনার যুগে মানুষ কি করবে তা বুঝে উঠতে পারবে না। ফেতনা তোমাদের পুরা সমাজ ও পরিবেশকে আচ্ছন্ন করে রাখবে। তা থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পথ তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ ফেতনা থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়ার দোয়া শিখিয়েছেন,

 

হে আল্লাহ, আমরা আগত ফেতনাসমূহ থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই। যাহেরি ফেতনা থেকেও পানাহ চাই এবং বাতেনি ফেতনা থেকেও পানাহ চাই। এ দোয়াটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিয়মিত দোয়াসমূহের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

 

ফেতনা কি?

 

ফেতনা কি জিনিস? ফেতনা কাকে বলে? ফেতনার যুগে আমাদের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষা কি? ফেতনা শব্দটি কোরআনুল কারিমে বিভিন্ন স্থানে উল্লেখিত হয়েছে। সূরা বাকারায় ইরশাদ হয়েছে,

 

আল্লাহর কাছে ফেতনা হত্যা অপেক্ষা মারাত্মক।

 

ফেতনার অর্থ ও মর্ম:

 

ফেতনা আরবি শব্দ। অভিধানে এর অর্থ হলো, আগুনে গলিয়ে স্বর্ণ বা রূপার খাঁদ পরখ করা। পরবর্তীতে শব্দটিকে পরখ করা, যাচাই করা, পরীক্ষা করা ইত্যাদি অর্থে ব্যবহার করা হয়। সুতরাং ফেতনার অন্য অর্থ হলো, পরখ করা ও পরীক্ষা করা। যখন মানুষ বিপদ-মসিবতে আক্রান্ত হয় কিংবা দুঃখ-বেদনার শিকার হয় তখন তার ভেতরগত অবস্থার একটি পরীক্ষা হয় যে, এরূপ অবস্থায় সে কী কর্মপন্থা অবলম্বন করে? সে কি ধৈর্য ধারণ করে, না ধৈর্যহারা হয়ে পড়ে? আল্লাহ তায়ালার অনুগত থাকে, না অবাধ্য হয়ে পড়ে? এ পরীক্ষাকেও ফেতনা বলা হয়।

 

হাদিস শরিফে ফেতনা শব্দের ব্যবহার:

 

হাদিস শরিফে শব্দটি যে অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে তা হলো, যখন এরূপ পরিস্থিতি দেখা দেয় যে, সত্যকে চেনা যায় না, হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য করা মুশকিল হয়, সঠিক এবং ভুলের মাঝে পার্থক্য বাকি থাকে না, সত্য কোনটি এবং মিথ্যা কোনটি তা বুঝা যায় না, এরূপ পরিস্থিতিতে বলা এটি ফেতনার যুগ। এমনিভাবে যখন সমাজে পাপাচার, গুনাহ ও অশ্লীলতা ব্যাপকরূপ লাভ করে একেও ফেতনা বলা হয়। এমনিভাবে না হককে, হক মনে করা এবং প্রমাণহীন জিনিসকে প্রমাণিত মনে করা একটি ফেতনা। যেমন, বর্তমান যুগে দেখা যায়, কাউকে কোনো দ্বীনি বিষয়ে বলা হলো যে, এ কাজটি গুনাহ, নাজায়েজ বা বেদআত। উত্তরে সে বলে, আরে, এ কাজ তো সবাই করছে, যদি এটা গুনাহ বা নাজায়েজ হয় তাহলে সারা দুনিয়ার লোক এটা কেন করছে? এ কাজ তো সৌদি আরবেও হচ্ছে…।

 

আজকের যুগে এটি একটি নতুন দলিল আবিষ্কৃত হয়েছে যে, আমরা সৌদি আরবে এ কাজ করতে দেখেছি। এর দ্বারা বুঝা যায়, সৌদি আরবে যেই কাজ হয় তা নিঃসন্দেহে সঠিক এবং বৈধ। অতএব, যে জিনিস দলিল ছিল না তাকে দলিল মনে করাও একটি ফেতনা।

 

দুই দলের লড়াই একটি ফেতনা: এই

 

এমনিভাবে যখন দু’জন মুসলমান কিংবা মুসলমানদের দুটি দল পরস্পর লড়াই করে এবং একে অন্যকে হত্যা করতে উদ্যত হয় এবং জানা যায় না, কে ন্যায়ের ওপর এবং কে অন্যায়ের ওপর আছে, তা হলে এটিও একটি ফেতনা। এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 

যদি দুজন মুসলমান তরবারি নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করে তা হলে হত্যাকারী এবং নিহত ব্যক্তি উভয়ই জাহান্নামে যাবে। এক সাহাবি জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসূল, হত্যাকারী জাহান্নামে যাবে, এটা তো ঠিক আছে; সে একজন মুসলমানকে হত্যা করেছে কিন্তু নিহত ব্যক্তি কেন জাহান্নামে যাবে? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কারণ সেও তার সঙ্গীকে হত্যা করার জন্য তরবারি উত্তোলন করেছিল। যদি কৌশলে সে পরাজিত না হত তাহলে সেই তার সঙ্গীকে হত্যা করত। কিন্তু সে কৌশলে পরাস্ত হওয়ায় প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হয়। এদের কেউই আল্লাহর জন্য লড়াই করেনি বরং দুনিয়ার জন্য, ধন-সম্পদের জন্য কিংবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে লড়াই করছিল এবং একে অপরের রক্তপিপাসু ছিল। অতএব দুজনেই জাহান্নামে যাবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উপরোক্ত আমলগুলো যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024 bikal barta
error: Content is protected !!