এম হোছাইন আলী কুতুবদিয়া প্রতিনিধ:
প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জনের ০৩টি সশস্ত্র জলদস্যু ডাকাত চক্র (ভোলা, বরিশাল, কুতুবদিয়া এবং আনোয়ারা এলাকায়) একত্রিত হয়ে সাগরে বড় পরিসরে দস্যূতার পরিকল্পনা করছে। উল্লেখিত চক্রটির পরবর্তী ১০-১২ দিনের মধ্যে প্রায় ১৫-২০ টি ট্রলারে ডাকাতি করার পরিকল্পনা ছিল। ডাকাতি শেষে লুটপাটকৃত মাছ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ভোলা ও বরিশাল অঞ্চলের দিকে নিয়ে বিক্রয় করা হতো। পরবর্তীতে লভ্যাংশ আনোয়ারা-কুতুবদিয়া এলাকার জলদস্যুদের নিকট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হত। এমন খবর পেয়ে গোয়ান্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানের নামে র্যাব। অভিযানের পরিকল্পনা অনুযায়ী র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি চৌকস আভিযানিক দল পতেঙ্গা হতে দক্ষিণ-পশ্চিমে গহীন সমুদ্রে তাদের গতিরোধের চেষ্টা করলে তারা র্যাবকে প্রতিহত করে এবং তাদের দিক পরিবর্তন করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নৌ-বন্দর এলাকার ১৫নং ঘাটের দিকে আসতে থাকে। এসময় র্যাব সদস্যরা তাদের ২টি ট্রলারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ট্রলার থেকে অস্ত্র ও ডাকাতির মাছ এবং মালামালসহ ৩০ জলদস্যুকে আটক করে।
র্যাব-৭, চট্টগ্রামের নিকট অভিযোগ গৃহীত হয় যে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের, ভোলা ও বরিশাল উপকূলীয় অঞ্চলের জলদস্যু বাহিনী কিছু দিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর সম্প্রতি তারা আবারও পূর্বের ন্যায় সাগরে জেলেদের উপর অত্যাচার, জুলুম, চাঁদাবাজি এবং অপহরণসহ সকল প্রকার অন্যায় কাজ পরিচালনা করছে। ভুক্তভোগীদের এরুপ অভিযোগের বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রাম মানবিকতার সহিত চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে উল্লেখিত এলাকায় ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ পর্যন্ত দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের স্থল ও সাগর পথে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের আভিযানিক দল দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান পরিচালনা করে ৩০ জলদস্যুকে আটক করে। আটকৃত জলদস্যুরা হলো ১। করিম (৩৩), পিতা- আবদু ছত্তার, সাং- দক্ষিণ পূর্বপাড়া, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম, ২। মোঃ রুবেল (৩৩) পিতা- মৃত জয়নাল আবেদীন, সাং-ওয়াইজার পাড়া,উত্তর ধূরুং থানা-কুতুবদিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ৩। মোঃ জফুর (৩৫), পিতা-মৃত মেখের আলী সাং-গহিরা, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ৪। শফি আলম (৪০), পিতা-জবন হোসেন, সাং-গহিরা, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ৫। আব্দুর রহিম (২৫), পিতা-নোয়া মিয়া, সাং-গোবাদিয়া, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ৬। মোঃ শামীম (২১), পিতা-মোঃ দুলাল বলি, সাং-আয়েমাবাগ, থানা-চর ফ্যাশন, জেলা-ভোলা, ৭। মোঃ ইউসুফ (২৯), পিতা-মৃত আব্দুল মান্নান বলি, সাং-আয়েশাবাগ থানা-চরফ্যাশন, জেলা-ভোলা, ৮। শাজাহান (৩৭), পিতা-মৃত কাঞ্চন মাঝি, সাং-জিন্নাহ, থানা-চরফ্যশন, জেলা-ভোলা, ৯। মোঃ সাহাব উদ্দিন (৩৫), পিতা-মোঃ রবি আলম, সাং-শান্তিনগর, থানা-শষীভূষন, জেলা-ভোলা, ১০। মোঃ শওকত (৩৭), পিতা-মৃত নুর মোহাম্মদ, সাং-সুন্নাহপাড়া,থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ১১। মোঃ ইসমাইল (২৬), পিতা-মোঃ আলমগীর, সাং-বোয়ালীয়া, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ১২। দেলোয়ার ইসলাম (৪২), পিতা-আবু সৈয়দ, সাং-উত্তর ধূরুং থানা-কুতুবদিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ১৩। নুর মোহাম্মদ (১৭), পিতা-হাসান শরীফ, সাং-ভোটতলী থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ১৪। আব্দুর রহিম সিকদার (৩৪), পিতা-আফজাল আহমদ, সাং-বারখাইন, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ১৫। মোঃ মফিজুর রহমান (৩০), পিতা-মৃত ইয়ার মোহাম্মদ, সাং-গোবাদিয়া, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম, ১৬। ফজল হক (৪০), পিতা- মৃত মোঃ শফি, সাং-দোয়াশি বাজার, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ১৭। মোঃ গিয়াস উদ্দিন (২৬), পিতা- বাদশা মিয়া, সাং-আন্দার ঘোনা, থানা-মহেশখালী, জেলা-কক্সবাজার, ১৮। মোঃ কাছেদ (১৯), পিতা-নুরুল হক, সাং-বোয়ালিয়া, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম, ১৯। মোঃ আকিদ খান (৩৭), পিতা-মৃত হবিবুর রহমান, সাং-গোবাদিয়া, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম, ২০। মোঃ দিদারুল ইসলাম (৩৩), পিতা-মৃত জমির উদ্দিন, সাং-দক্ষিন ধূরুং থানা- কুতুবদিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ২১। মোঃ নাইম (১৯), পিতা-আক্তার হোসেন, সাং-আলী আকবর সিকদার পাড়া, থানা-কুতুবদিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ২২। মোঃ হারুন (৪৪), পিতা-আব্দুর সবুর, সাং-দক্ষিন পূর্ব পাড়া, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম, ২৩। মোঃ ইয়াছিন(২৯), পিতা- মৃত-আব্দুর সবুর, সাং-দক্ষিণ পূর্ব পাড়া, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম,২৪। মোঃ খলিলুর রহমান (২৫), পিতা-আবুল কালাম, সাং- কুর্দ্দ গহিরা, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম, ২৫। মোঃ ইকবাল হোসেন (২৪), পিতা-সালেহ আহম্মদ, সাং- কুর্দ্দ গহিরা, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্টগ্রাম, ২৬। মোঃ শাহেদ (২২), পিতা মোঃ রফিক সাং-কুর্দ্দ গহিরা, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম, ২৭। মোঃ হোসেন (২৭), পিতা-মৃত ইয়ার মোহাম্মদ, সাং-কুর্দ্দ গহিরা, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম, ২৮। মোঃ আলী হোসেন (২৪), পিতা-আব্দুস সালাম, সাং-কুর্দ্দ গহিরা, থানা-আনোয়ারা , জেলা-চট্রগ্রাম, ২৯। আব্দুল মান্নান (৪০), পিতা-মৃত আব্দুল খালেক, সাং- কুর্দ্দ গহিরা, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম, ৩০। মোঃ সোলায়মান (৩৮), পিতা-মৃত আব্দুর রশিদ, সাং-কুর্দ্দ গহিরা, থানা-আনোয়ারা, জেলা-চট্রগ্রাম। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত সকল জলদস্যুদের জ্ঞাতসারে তাদের নিজ হেফাজতে থাকা ০২ টি ট্রলার থেকে ০৮টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ০৫টি কার্তুজসহ বিভিন্ন রকমের দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমান সরাঞ্জাম উদ্ধারসহ জলদস্যু ডাকাতদের গ্রেফতার করা হয়।