মোহাম্মদ হোসাইন (মাসুম)
স্টাফ রিপোর্টার-
নববর্ষের প্রকাশনা ইসলামী শ্রমনীতির আন্দোলনকে বেগবান করবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, ইসলামী শ্রমনীতিতে শ্রমজীবী মানুষের প্রকৃত মুক্তি নিহিত রয়েছে। ইসলামী শ্রমনীতির সুফল শ্রমজীবী মানুষের কাছে তুলে ধরতে নববর্ষের প্রকাশনা অতীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ২০২৪ সালের নববর্ষের প্রকাশনাও অতীতের ন্যায় ইসলামী শ্রমনীতির আন্দোলনকে বেগবান করবে।
তিনি রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ফেডারেশনের ২০২৪ সালের নববর্ষের প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচনকালে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক জামিল মাহমুদ-এর সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান।
আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবীদের মাধ্যমে মানুষের জন্য জীবন বিধান পাঠিয়েছেন। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান সমাজ রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। নবী (সা.) শ্রমজীবী মানুষদের খুব ভালোবাসতেন এবং তাদের অধিকারের ব্যাপারে বহু নির্দেশনা দিয়েছেন। মালিকদের উদ্দেশ্যে নবী (সা.) বলেছেন, শ্রমিকরা তোমাদের ভাই। তোমরা যে খাবার খেয়ে থাকো এবং যা পরিধান করো, তোমাদের শ্রমিকদের অনুরূপ খাবার ও পোশাক প্রদান করো। শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরি পরিশোধ করো। মালিকের লভ্যাংশ থেকে শ্রমিকদের ভাগ দাও। এটাই ইসলামী শ্রমনীতি।
তিনি বলেন, নবী (সা.)-এর দেখানো পথ অনুসরণ করলে কোথাও শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ নেই। শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার পেলে মালিকদের আয়-উন্নতি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। সত্যিকার অর্থে মেহনতি শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পেলে দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ঘটবে। দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে না। শ্রমিকরা তাদের সর্বস্ব দিয়ে মালিক ও রাষ্ট্রের জন্য আত্মনিয়োগ করবে।
দুঃখজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শ্রমিকের ওপর সর্বত্র জুলুম-শোষণ, নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে। ন্যায্য মজুরি চাইতে গিয়ে শ্রমিকদের জীবন দিতে হচ্ছে। গত মাসেও ৪জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের একটাই অপরাধ তারা ন্যায্য মজুরি চেয়েছিল। দেশে এখন চরম মুদ্রাস্ফীতি চলছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমিকরা বাজারে যেতে ভয় পায়। মালিকরা যা মজুরি দেয় তা দিয়ে শ্রমিকের সংসার চলে না। তা সত্ত্বেও শ্রমিকরা নিদারুণভাবে জীবন অতিবাহিত করছে। রাতদিন পরিশ্রম করে মালিকের উৎপাদন ঠিক রেখেছে। অপরদিকে মালিকরা শ্রমিকদের জীবনযাত্রা ঠিক রাখার জন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এই দুর্দিন অবসান করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে ইসলামী শ্রমনীতির বাস্তবায়ন করতে হবে। কোটি কোটি শ্রমিকের কাছে নববর্ষের প্রকাশনা পৌঁছিয়ে দিয়ে তাদেরকে ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে।