আল আমিন কাজী, বরিশাল : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইয়াজুল হক রাজুর কর্মীদের মারধর, মটরসাইকেল ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বানারীপাড়ার উদয়কাঠীতে বেলা দুটার সময় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় ফাইয়াজুল হক রাজুর সমর্থকরা আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে উজ্জ্বল, ফিরোজ, তুফান, ফাহাদ, দুলাল, আলামিনসহ ৭ জনকে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়- আজ ২ ডিসেম্বর বেলা ১২ দিকে উদয়কাঠী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড লবনসারাতে বানারীপাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা ও তার ভাই উদয়কাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রাহাদ আহম্মেদ ননী নেতৃেত্ব কালাম বেপারী, জুয়েল ফকির, লিমন কাওসার, জসিম মিরসহ ৫০-৬০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর সসস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় আমার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মামুন হাওলাদার, খলিলুর রহমান, মাসুদ রানা, মীর আলমগীর ও হাফিজুর রহমান ও হাফিজুর রহমানের ছয়মাসের নবজাতক বাচ্চা আহত হন। হাফিজুরের ছয়মাসের বাচ্চাকে আছাড় দিয়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বানচাল করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হোসেন সানা ও উদয়কাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রাহাদ আহম্মেদ ননী দফায় দফায় গুলি করছে।
আরো জানা যায়- বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আক্তার হোসেন মোল্লা, কামাল মোল্লা ও কাউন্সিলর জাকির মোল্লা স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইয়াজুল হক রাজুর কর্মী সাইজ উদ্দিন নামের ঈগল মার্কার কর্মীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুকের নেতৃত্বে জুয়েল ফকির ও কালাম বেপারীসহ ২০-২৫ জনের একটি গ্রুপ হায়দার ঘরামিসহ ৫-৬ জনকে পিটিয়ে আহত করে।
এ ব্যাপারে বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ মাইনুল ইসলাম বলেন, বানারীপাড়ার বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে নৌকা ও ঈগল সমর্থকদের মধ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। পরে বিশারকান্দিতে ঈগল সমর্থকদের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে । ঘটনাস্থলে পুলিশি, বিজিবি, আনসার , ওসি ও এ্যাসিল্যান্ড রয়েছে।তবে পরিবেশ এখনো থমথমে রয়েছে ।
বানারীপাড়ার সাংবাদিক পিয়াল আহমেদ জানান , ঘটনাস্থলে এখন পুলিশ ও আনসার রয়েছে।ঈগল সমর্থকদের প্রায় ১৬টি মটরসাইকেল ভাংচুর ও অগ্নসংযোগ করেছে নৌকার লোকজন। এ ঘটনায় বানারীপাড়ায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইয়াজুল হক রাজু বলেন, বানারীপাড়ায় আমার জনসমর্থন দেখে তাদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে তাই তারা আমার কর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগনও গুলি বর্ষণ করেছে। এটা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। তিনি দায়ীদের অতিসত্ত্বর গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এদিকে, উজিরপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজুর কর্মীদের উপর মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় হরতা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড পাথারকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলো শেরে বাংলার দৌহিত্র ও আওয়ামী লীগের আর্ন্তজাতিক উপ-কমিটির সদস্য একে ফাইয়াজুল হক রাজু (ঈগল) এর কর্মী উত্তম কুমার বিশ্বাস ও দীপং রায়। আহতরা বর্তমানে মুমূর্ষ অবস্থায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
আহতরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইয়াজুল হক রাজু এর নির্বাচনি কার্যালয় বসা ছিলাম। হঠাৎ করে পরিকল্পিতভাবে নৌকার অতিউৎসাহিত কর্মী আবুল বাশার লিটন , শাহিন হাওলাদার, ইদ্রিস সহ ৮ জনের একটি দল ক্লাবে ঢুকে মারধর ও ভাঙচুর চালায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের কে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে শেবাচিমে প্রেরণ করে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও আহতের স্বজনরা আরো জানান।