মোঃ হোসেন, ভোলা সদর প্রতিনিধি :
ক্লাস চলাকালীন সময় হঠাৎ করেই পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩০ জন স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনার পরপরই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাদের। তবে এ ঘটনায় আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে। তবে জিহাদ নামের শিক্ষার্থীর অসাবধানতাবশতের কারনে বলপেনের পিন তার বাম হাতের আঙ্গুলে ঢুকে যায়। এবং এই ঘটনায় পুরো শহর জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাৎক্ষণিক স্কুল ছুটি দিয়ে দেন।
অদ্য ১৯ শে মার্চ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ভোলা সদরের পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারও মাথাব্যথা, কারও শরীর কাঁপা, কারও দুর্বলতা, কারও দাঁতে দাঁত লেগে যাওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা গেছে। ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আবু সাইয়েদ জানান, বেলা ১১ টার দিকে ক্লাস চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করে জাহিদ নামের এক শিক্ষার্থীর অসাবধানতাবশতর কারনে বলপেনের পিন তার বাম হাতের আঙ্গুলে ঢুকে যায়, তার পর থেকেই মাথাব্যথা নিয়ে ক্লাসে ঘুরে পড়ে। এরপর থেকে একের পর এক শিক্ষার্থী ক্লাসে ঘুরে পড়লে স্থানীয়রা ও শিক্ষকরা একত্রিত হয়ে তাদের উদ্ধার করে ভোলার ২৫০ শয্যা সদর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি আছে।
এ দিকে এ ঘটনায় অসুস্থ হওয়া শিক্ষার্থীদের স্বজনরা ভোলা সদর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে ভিড় করছেন। কেউ কেউ সন্তানের এমন অসুস্থতা দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীরাই অজানা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি খুবই উদ্বিগ্ন। এ ঘটনায় তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, শ্রেণী কক্ষে দ্বিতীয় ক্লাস চলছিল। এ সময় জাহিদ নামের এক অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর অসাবধানতাবশত বলপেনের পিন তার হাতের আঙ্গুলে ঢুকে যায়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন সেই শিক্ষার্থী। এটি দেখে কিছুক্ষণের মধ্যে সহপাঠীরা মাথা ঘুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ ভাবে অল্প সময়ের মধ্যে ওই শ্রেণীর ১৬ জন এবং পরবর্তীতে অন্য শ্রেণীর ১৪ জনসহ মোট ৩০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঘটনার পর পরই অভিভাবকদের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সে করে শিক্ষার্থীদের ভোলা সদর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করানো হয়। তাদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ। তবে তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই।
শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার খবর শুনে ছুটে আসেন শিক্ষা অফিসার দীপক হালদার শিক্ষার্থীদের সার্বিক খোঁজ খবর নিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, হঠাৎ এই অসুস্থতার বিষয় তিনি সিভিল সার্জন এবং ইউএনও স্যারদের সাথে আলাপ আলোচনা করবে তারপর প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিবে আপাতত সকল শিক্ষার্থী ভালো আছে।
ডা. একেএম শফিকুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, ধারণা করা হচ্ছে শিশুরা গণমনস্তাত্ত্বিক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত মানসিক ও আবহাওয়া থেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তিনি আরও জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের কাউন্সেলিং করছে চিকিৎসকেরা।