পাথরঘাটা (বরগুনা) সংবাদদাতা
রাত তিনটা বাজতেই হঠাৎ করে বরগুনার পাথরঘাটার লঞ্চ ঘাটের বাড়ানি খালে একটি টলার থেকে লাইট দিয়ে সিগনাল দিতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই খালে রাখা সারিসারি ট্রলার একের পর এক সাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। মৎস্য বিভাগের নিষেধাজ্ঞার মোবাইল কোর্টের টিম দাড়িয়ে টর্চ লাইট দিয়ে এ সিগনাল দিতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষন পরে মৎস্য বিভাগের ট্রলারটিতে একজন কর্মচারীকে বসে থাকতে দেখা যায়। রোববার ভোর ৩ টার দিকে পাথরঘাটা ভাড়ানী খালের খেয়া ঘাটের পাশে এমন মানচিত্র দেখা যায়।
জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, মা ইলিশ রক্ষার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ৩ থেকে ৪ দিন আগে বরফ কল গুলো চালু করা হয়। এরপর থেকেই একে একে সব ট্রলারগুলোতে বরফ এবং বাজার সওদা করে নিয়ে সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার তিন দিন আগে থেকেই ওই ট্রলারগুলো রাতের আঁধারে একে একে সাগর যাত্রা শুরু করে। আর এই সাগরে যাত্রার জন্য প্রত্যেক ট্রলার থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে মৎস্য অফিসের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। এমন কথাই জানিয়েছেন জেলেরা।
সাগরে যাওয়ার সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জেলে জানান, তারা প্রতিবছরই ৬৫ দিনের অবরোধ এবং ২২ দিনের মা ইলিশ রক্ষার অবরোধে টাকা দিয়ে প্রশাসনের সকল দপ্তরকে ম্যানেজ করেই সাগরে যান। যে ট্রলারগুলো টাকা দিতে না পারে তাদেরকে যেতে দেয়া হয় না।
পাথরঘাটা মৎস্য বিভাগের কর্মচারী আবু বকর জানান, রাত বারোটার পরেই তাদের কর্মকর্তারা বাসায় চলে গেছেন এবং সাথে থাকা পুলিশ ও থানায় চলে গেছেন। একের পর এক ট্রলার তাদের সামনে থেকেই চলে যাচ্ছে সাগরে। তারা নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছেন কিছুই বলার ছিল না বলে জানান তারা। সাগর যাওয়ার ট্রলার গুলোর অনুমতি কে দিয়েছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
পাথরঘাটা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল হক জানান, রাতে আমাদের মোবাইলটিম ছিলো, তবে জেলেদের সাগরে যেতে দেয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই। মৎস্য বিভাগের ট্রলার থেকে টর্সলাইট দিয়ে ইশারা দেয়ার পরে খালে থাকা ট্রলার সাগরে যাত্রা শুরু করেছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।
পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, রাতে পুলিশ ফোর্স অভিযানে যায়নি, এ রকমের কোন ঘটনা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে কোস্টগার্ডের দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. সাব্বির সাংবাদিকদের জানান, শনিবার আমাদের টহলকালে সাগরগামি কোন ট্রলার দেখা যায়নি। তবে আমাদের লোকবল কম এ জন্য কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে।