রানা খান, শ্রীপুর গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজারে কামারপট্টি এলাকায় ,মামাশ্বশুরের বাড়িতে স্মৃতি সরকার( ২১) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ২৮ই অক্টোবর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে নিহতের নিজের ঘরে কে,বা কারা স্মৃতিকে ধারালো দা দিয়ে ঘাড়ে কুপিয়ে চলে যায়।পরে স্মৃতির চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে স্মৃতিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুদেপ চক্রবর্তী বলেন, ‘স্মৃতি সরকার কে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে কয়েকজন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা কেটে ফেলায় প্রচুর রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া হাতসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।’ নিহত স্মৃতি রাণী সরকার (২১) ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার দৌলতপুর গ্রামের সুনীল পালের মেয়ে। তাঁর স্বামী কাব্য সরকার শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের কেশব চন্দ্র সরকারের ছেলে। বাবার সঙ্গে পারিবারিক বিরোধের কারণে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বামী কাব্য সরকার বরমী বাজারের কামারপট্টির মামাবাড়িতে বসবাস করতো। তিন বছর আগে কাব্যের সাথে প্রেম করে বিয়ে করেন নিহত স্মৃতি সরকার। তাদের ঘরে শ্রেয়ান নামের দুই বছরের এক ছেলে রয়েছে। নিহতের নানীশাশুড়ি বলেন, আমি পাশের ঘরে ঘুমের প্রস্তুতি সেরে বিছানায় শুয়ে ছিলাম। স্মৃতির স্বামী আজকে সন্ধ্যায় ভারতের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা দেওয়ায়, স্মৃতি তার ছেলে শ্রেয়ানকে নিয়ে একাই তার ঘরে ছিল। হঠাৎ স্মৃতি দিদা বলে চিৎকার দেয়। দ্রুত আমি ঘরের বাইরের বারান্দায় এসে দেখি স্মৃতি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছে। এরপর আমি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’ তবে কাউকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেননি বলে জানান তিনি। প্রতিবেশী সাগর বলেন, আমি বাড়ির মহিলাদের আত্ম চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি স্মৃতি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রয়েছে। আমি তাকে দ্রুত উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই ,সেখানে ডাক্তার পরীক্ষা করে স্মৃতিকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই হৃদয় সরকার বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের এক ঘণ্টা আগে আপা আমাকে ফোন করে জানায় তার স্বামী ইন্ডিয়া যাওয়া জন্য রওনা হয়েছে। এক ঘণ্টা পর আপুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফোন করে জানায় বাড়িতে প্রবেশ করে কারা যেন আপুকে কুপিয়েছে। এরপর আমরা দ্রুত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে মরদেহ দেখতে পাই। আপুকে ওরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার পর গলা কেটে হত্যা করে। শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘রাতেই শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞেসবাদের জন্য নিহতের স্বামী কাব্য সরকারকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা ধারালো দা ও জুতা জোড়া উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। তাছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শ্রীপুর সার্কেলের সার্কেল এসপি আফজাল হোসেন, শ্রীপুর থানার ওসি অপারেশন নয়ন কর্মকার।