এ এ রানা::
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদে ৪ মাস ধরে সচিব পদ শূন্য হয়ে রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ওই ইউনিয়নের লোকজন। ইউনিয়নে চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম। নতুন করে জন্ম ও মৃত্যু সনদ তৈরি এবং সংশোধনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাউকে কিছু না জানিয়ে ইউনিয়ন সচিব এখলাছুর রহমান বিদেশে গমন করেছেন। এ কারণে ৪ মাস ধরে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ নতুন সচিব আসবেন, সে কথা বলতে পারছেন না কেউ। ফলে চরম ভোগান্তি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ অতি জরুরি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক। অন্তত ১৭ রকমের নাগরিক সেবার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ দরকার হয়। একইভাবে ওয়ারিশান সনদসহ অনেক কাজেই দরকার পড়ে মৃত্যু সনদও। প্রতিদিন এই ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে শতশত মানুষ এ সেবা গ্রহণ করে। কিন্তু সেগুলো বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ইউনিয়ন সচিব এখলাছুর রহমান কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত। ফলে ইউনিয়নে বিভিন্ন কাজে আসা লোকজন বিরক্ত এবং হয়রানির শিকার হন। কাউকে কিছু না জানিয়ে তিনি বিদেশে চলে যান। তার এই গাফিলতি ও অসতর্কতার কারণে চার মাস ধরে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও কোনো ভূমিকা পালন করছেন না বলে অভিযোগ।
ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে কথা হয় হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করবো। পাসপোর্ট করতে এনআইডি কার্ড লাগে। আর এনআইডি কার্ড করতে জন্ম সনদ লাগে। সচিব না থাকায় সনদ পাচ্ছি না।
একই গ্রামের সেলিম আহমদ বলেন আমার মেয়ের স্কুলে রেজিস্টেশন করার জন্য জন্ম নিবন্ধন করতে চার মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদে ঘুরছি। কিন্তু ইউনিয়নে সচিব নেই -এই অজুহাতে তারা আর জন্ম নিবন্ধন করে দেয় না।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব এখলাছুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক আহমদ বলেন, চার মাস ধরে ইউনিয়নে সচিব নেই। নতুন সচিবের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিকট আবেদন করেছি। আশা করি শিগগির সচিব পাওয়া যাবে।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ থাকার বিষয়টি জেনেছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশাকরি ২/৩ দিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হবে।