এ এ রানা:: জুয়ার বিরুদ্ধে সাড়াঁশি অভিযান শেষে এবার পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে অপরাধ দমনে মাঠে নেমেছে সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। তারই ধারাবাহিকতায় বিগত কয়েকদিন যাবৎ সিলেটের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৮ যুবক-যুবতীকে আটক করে সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সেই ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবেই এবার উত্তর ও দক্ষিন সুরমার দুটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে আরো ১৯ যুবক-যুবতীকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। এপর্যন্ত অসামাজিকতার দায়ে মোট ৪৭ যুবক-যুবতীকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (২মার্চ) রাত সোয়া ৮ টার দিকে সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানাধীন তালতলাস্থ হোটেল সুফিয়া (আবাসিকে) অভিযান চালিয়ে ৭জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ৪ জন যুবক ও ৩ যুবতী রয়েছে।
আটকের বিষয়টি রোববার রাতে নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
আটককৃতরা হলেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থানার ভানুগাছ এলাকার কবির হোসেনের ছেলে তানভীর হোসেন (১৯), বড়লেখা উপজেলার উত্তর পাকনা গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে আব্দুল জব্বার(২৭), সুনামগঞ্জ সদর থানার সরদারপুর গ্রামের মো.সেলিম মিয়ার ছেলে মাজহারুল ইসলাম(২১), দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার থানার ধরমপুর গ্রামের মইন উদ্দিনের ছেলে রাফি আহমদ(২৪), একই উপজেলার করিমপুর গ্রামের ইসমাইল আলীর মেয়ে রুবিনা বেগম(২১), গোয়াইনঘাটের হাদারপাড় গ্রামের ছেরাগ আলীর মেয়ে লুতফা বেগম(৩০), সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার ধনপুর গ্রামের আতাউর রহমানের মেয়ে শাহীনা আক্তার(২১)।
এদিকে ৩ মার্চ সিলেট মহানগরীর কদমতলীতে হোটেল সাগর এন্ড রেস্ট হাউজ থেকে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আরো ১২ যুবক-যুবতীকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।
রোববার (৩ মার্চ) রাত ৯ টার দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন কদমতলীস্থ হোটেল সাগর এন্ড রেস্ট হাউজে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদের মধ্যে ৬ জন যুবক ও ৬ যুবতী রয়েছেন। তারা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর থানার বালিকান্দী এলাকার মৃত তফাজ্জল হোসেনের মেয়ে রুজিনা বেগম(৩৮), নোয়াখালি কবিরহাট থানার রফিকুল ইসলামের মেয়ে রুজিনা আক্তার নূপুর(২৬), বগুড়া সদর থানার মহাস্থানগড় (ইজ্জত মন্ডলের বাড়ি) এলাকার মোঃ ঠান্ডু মন্ডলের মেয়ে লতা আক্তার(২৮), ময়মনসিংহ ঈশ্বরগঞ্জ থানার পাড়াডাংগি এলাকার মৃত আব্দুল ছত্তারের মেয়ে খালেদা আক্তার(৩৫), ফেনী ফুলগাজি থানার বসিতপুর এলাকার আবুল কালামের মেয়ে বৃষ্টি বেগম(২৭), কুড়িগ্রাম সদর থানার পলাশবাড়ি এলাকার মোঃ মোশাররফ হোসেনের মেয়ে মরিয়ম বেগম(২২), ব্রাক্ষনবাড়িয়া সরাইল থানার শাহজাদাপুর এলাকার মৃত ধনু মিয়ার ছেলে মোঃ সাচ্চু মিয়া শান্ত(২৭), সুনামগঞ্জ সদর থানার নবীনগর এলাকার মৃত আব্দুল হান্নানের ছেলে গোলাম কিবরিয়া (৪৮), সিলেটের ওসমানীনগর থানার কবীন্দ্র মালাকারের ছেলে দুলন মালাকার(৩০), সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার পিঠাটিকর এলাকার নানু মিয়ার ছেলে সাঈদ হোসেন এলিল(২৪), একই থানার মল্লিকপুর এলাকার সোহেল আহমদের ছেলে মোঃ মাশরাফি (২১) ও সুনামগঞ্জ সদরের বুরিস্থল কান্দিগাও এলাকার দিলশাদুর রহমানের ছেলে মতিউর রহমান(৩৭)।
এব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় দুটি আবাসিক হোটেল থেকে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগরী পুলিশ আইন, ২০০৯ এর ৭৭ ধারা মোতাবেক পুলিশ স্কর্টের মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
অপরাধীদের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির সম্প্রতি অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ছেন সিলেটের সচেতন মহল। তবে অন্যান্য চিহ্নিত হোটেল গুলোতে অভিযান চালাতে ডিবির উর্ধ্বতন কর্মকতাদের অনুরোধ করেন তারা।
এখনো যে সব হোটেল অধরা সে গুলো হচ্ছে উত্তর সুরমার আম্বরখানা এলাকার হোটেল কায়কোবাদ, বিমানবন্দর রোডের হোটেল শেরাটন, হোটেল মায়াবন। বন্দরবাজার এলাকার হোটেল তালহা আবাসিক, মর্ডান রেষ্ট হাউজ, লালবাজার এলাকার সবকটি হোটেল, লালদিঘীর পাড় এলাকার হোটেল নীলাদ্রি আবাসিক, সুরমা মার্কেটের হোটেল মেঘনা। জিন্দাবাজার এলাকার সবুজ বিপনী রেস্ট হাউজ। মিরাবাজার এলাকার হোটেল জাহান আবাসিক। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার হোটেল শাপলা আবাসিক, চৌধুরী হোটেল, মা আবাসিক হোটেল।
দক্ষিণ সুরমার বাইপাস রোডের হোটেল নিউতারা আবাসিক, হুমায়ুন চত্ত্বর এলাকার হোটেল সেন্টমার্টিন আবাসিক, হোটেল মেঘনা, হোটেল পদ্মা, কদমতলী টার্মিনাল রোডের হোটেল যাত্রীসেবা, হোটেল আকাশ আবাসিক। ষ্টেশন রোডের নিউ বিরতি, হোটেল খান, হোটেল সাইমন, হোটেল শাপলা,হোটেল আগমন, হোটেল সিতারা আবাসিক এবং ব্যাটারী মার্কেট সংলগ্ন হোটেল হানিফ আবাসিক।