1. jhramjan88385@gmail.com : bbarta :
  2. muhammadalomgir350@gmail.com : Muhammad Aaomgir : Muhammad Aaomgir
  3. abrahim111099@gmail.com : Bikal Barta :
সিলেটের বিভিন্ন সীমান্তের চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্যের ১ম পর্ব - Bikal barta
৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| শীতকাল| শনিবার| রাত ১২:২০|

সিলেটের বিভিন্ন সীমান্তের চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্যের ১ম পর্ব

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত সময় সোমবার, এপ্রিল ৮, ২০২৪,
  • 182 জন দেখেছেন

এ.এ.রানা ::
সিলেটের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে চার উপজেলার ৮০টি স্থান দিয়ে ভারত থেকে আসছে গরু-মহিষসহ নানা ধরনের পণ্য ও মাদক। এর মধ্যে আছে চিনি, পেঁয়াজ, চা পাতা, শাড়ি, জামা, প্রসাধনসামগ্রী, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, জুতা, টায়ার, ওষুধ ও যানবাহনের পার্টস। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানিদের যেন উৎসব চলছে। ঈদ সামনে রেখে দিন-রাত পণ্য আনা হচ্ছে।
সরেজমিন বিভিন্ন স্পটে দেখা গেছে, গরু ও মহিষের চালান সীমান্ত পার করে এনে নির্দিষ্ট স্থানে মজুত করার পর সময় বুঝে ট্রাক কিংবা অন্য যানবাহনে পৌঁছে দেওয়া হয় গন্তব্যে। চিনি, পেঁয়াজ, মাদক, প্রসাধনসামগ্রী ও কাপড়ের বস্তা বা কার্টন শ্রমিকরা হাতে-পিঠে-মাথায় করে নিয়ে আসছেন। সীমান্ত পার করে নির্দিষ্ট জায়গায় জড়ো করার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি নেতাসহ জনপ্রতিনিধিরা। তাদের মাধ্যমে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, বিজিবির নাম করে টাকা নেওয়া হয়। অনেক পয়েন্টে আবার বাহিনীর সদস্যরা টাকা নেন। প্রতিদিন চোরাচালান পণ্য থেকে ৪০-৫০ লাখ টাকা আদায় করা হয়। এগুলো বিভিন্ন জনের পকেটে যায় বলে জানা গেছে।

গত মাসে জেলা পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ৮১ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করে। এ ছাড়া ১২৫ বস্তা চিনিসহ তিনজনকে আটক করে। মহানগর পুলিশ নগর এলাকা অতিক্রম কিংবা প্রবেশকালে দুই কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য ছাড়াও এক হাজার বস্তা চিনি জব্দ এবং সাতজনকে আটক করে। বিজিবি অভিযান চালিয়ে চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে। তবে পুলিশ-বিজিবির অভিযানে জব্দ পণ্য মোট চোরাই পণ্যের এক হাজার ভাগের এক ভাগ হবে বলে অনেকে মনে করেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর সীমান্তে বেশি চোরাচালান হয়। এর পর আছে কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা। এ ছাড়া জকিগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি এলাকা দিয়ে মাদক প্রবেশ করে। ৮০টি স্থান দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার পণ্য আসে। অবৈধভাবে পণ্য আসার কারণে সরকার বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বেশির ভাগ চোরাচালান হয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। জৈন্তাপুরের হরিপুর বাজারের শতাধিক ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রণ করেন চোরাচালান। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকার আরও ১০০ জনের মতো ব্যবসায়ী রয়েছেন। জড়িত রয়েছে সিলেট নগরীর কিছু লোকও। পণ্যের বিপরীতে তারা হুন্ডিসহ বিভিন্নভাবে টাকা পরিশোধ করে থাকেন। এসব ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন চোরাচালানে। ভারতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ রয়েছে। সীমান্ত পার করায় নিয়োজিত থাকেন একশ্রেণির শ্রমিক। তারা পণ্য বহনের জন্য রাস্তার দূরত্ব বুঝে পারিশ্রমিক পান। উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের কখনও ফাঁকি দিয়ে, কখনওবা ম্যানেজ করে পণ্য আনা হয়। যারাই যে মাধ্যমে পণ্য নিয়ে আসেন, টাকা দিতে হয়। ‘লাইনম্যান’খ্যাত লোকজন টাকা তোলে। লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন প্রভাবশালীরা। তাদের মধ্যে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। সীমান্ত পার করার পর পণ্য এলাকার বাড়ি কিংবা দোকানসহ নিরাপদ স্থানে মজুত করা হয়। পরে সেখান থেকে ট্রাক, পিকআপে হরিপুর বাজার কিংবা অন্য জায়গায় পাঠানো হয়।
গোয়াইনঘাট সীমান্ত
সবচেয়ে বেশি সীমান্ত এলাকা গোয়াইনঘাট উপজেলায়। উপজেলার অন্তত ৩০টি স্থান দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে দেড়শ ট্রাক পণ্য আসে। আসে গরু-মহিষও। জাফলং জিরো পয়েন্টে গত ২৮ মার্চ দেখা গেছে, কয়েকজন তরুণ মাথায় চিনির বস্তা নিয়ে প্রবেশ করছেন। পাশেই সংগ্রামপুঞ্জি বিজিবি ক্যাম্প থাকলেও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি সদস্যদের। পণ্য বহন করে স্থানীয় বিভিন্ন গুদামে মজুত করে রাখা হয়। এ উপজেলার চোরাচালান পয়েন্টগুলোর মধ্যে আছে নলজুরি আমস্বপ্ন, তালতলা, তামাবিল স্থলবন্দর, সোনাটিলা, লালমাটি, জিরো পয়েন্ট, পুরাতন সংগ্রাম পুঞ্জি, নকশিয়া পুঞ্জি, নামাপুঞ্জি, পাদুয়া, সোনারহাট, বিছনাকান্দি ও দমদমা। পুলিশের গরুর লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন বিছনাকান্দি এলাকার কামাল মেম্বার, পশ্চিম জাফলংয়ের যুবলীগের দেলোয়ার হোসেন লুনি, রাধানগরের উজ্জ্বল, মানিক, জাফলংয়ের সুমন, মান্নান ও ফারুক মেম্বার, বিএনপি নেতা জয়নাল, জিয়াউল হক, যুবলীগ নেতা সোহেলসহ উপজেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা। এ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ নেতা কামাল মেম্বারকে একাধিকবার ফোন করলেও রিসিভ করেননি। বিএনপি নেতা জিয়াউল হক নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে জানান, মাঝেমধ্যে সমতল এলাকা দিয়ে গরু ও মহিষ আসে। গোয়াইনঘাট থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁর এলাকায় চোরাচালান বন্ধ রয়েছে।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024 bikal barta
error: Content is protected !!