নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটের মাছিমপুরে আওয়ামী ডেবিলরা আত্মগোপনে সক্রিয়রা খোলস ছেড়ে জানান দিচ্ছে ভিন্নভাবে যেমন কখনো ঝাটিকা মিছিল, কখনও হামলা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগের ডেভিলরা। তারা অত্যান্ত পরিকল্পিতভাবে আবারও সক্রিয় হচ্ছে। গত ২ এপ্রিল বুধবার নগরীর ধোপাদীঘিরপাড়ে মিছিল করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। এবার ১১ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের উপর প্রকাশ্যে নগরীর ব্যস্ততম উপশহর পয়েন্ট সংলগ্ন জেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স রাস্তায় হামলা চালিয়ে ডেভিলরা তাদের শক্তির জানান দিচ্ছে ভিন্নভাবে।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায় শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেটে নগরীর উপশহর ল’ কলেজের সামনে গাড়ি পার্কিং নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকর্মীদের ২ দফা পিটিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত হন জাতীয়তাবাদী পরিবার ল কলেজ ইউনিট এবং সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজ, সিলেট মহানগর বিএনপির সহ-ত্রান বিষয়ক সম্পাদক জুলাই ২৪ আন্দোলনে হামলায় আহত আলী আশরাফ খান দিপু ও সাদিকুর রহমানসহ ৩ জন।
১ম দফা উপশহর পয়েন্টে এবং ২য় দফায় ৮নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমির মাছিমপুরের বাসায় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন এলাকার একটি পরিবার ছাড়া কোনো স্থানীয় বাসিন্দারা ছিলেন না এই হামলায়।
১ম দফা ঘটনার পর রাত আনুমানিক ১১ ঘটিকার সময় আজিজুল হোসেন আজিজের অনুসারীরা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ- সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ছুটে যান মাছিমপুর এলাকায়। কিন্তু তারা জানতেন না এখানে ডেভিলদের আস্তানা, সরকার পরিবর্তনের পর এই জনবহুল এলাকায় সকল আওয়ামী ডেবিল আত্নগোপন করে বসবাস করছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এই প্রতিবেদককে জানায়। উপশহর ল’ কলেজের সামনের ঘটনার পরই সেই সব ডেভিলরা তাদের বাসার পিছনের বড় কোলোনীর মানুষদের জড়ো করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে ওত পেতে থাকে।
এসময় আওয়ামী লীগ কর্মী মান্নান, তার ছেলে ২৩নং ওয়ার্ড যুবলীগ কর্মী অপু, ২৩নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মঞ্জু, আলম খান মুক্তি গ্রুপরে ছাত্রলীগ নেতা দিপু, ছাত্রলীগের বিধান গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী অপি, যুবলীগের মুজিব, ২৩নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লায়েক, ২৩ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের অনিক এই হামলার নেতৃত্বদেন। তারা একই পরিবারের লোক। তাদের সাথে ছিল তাদেরই কোলোনীর লোকজন। হামলার সময় তারা ডাকাত-ডাকাত বলে চিৎকার করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। তাৎক্ষনিক বিষয়টি বুঝতে পেরে আজিজের অনুসারীরা তাদের মোটরসাইকেল রেখেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায়। এসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও ৩ জন আহত হন এবং সাংবাদিকদের সাইকেলাসহ প্রায় ৩১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা দিপুর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় ৮টি মামলার রয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে কোন ধরনের ভূমিকা পালন করেনি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমি বলেন, তাদের পরিবারের কেউই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নন। অথচ যাদের নাম এখানে উল্লেখ করা হয়েছে তারা সবাই একই পরিবারের লোকজন।
ঘটনার পরপরই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিলের, অনুষ্ঠানে তাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়। নেটিজেনরা ফেসবুকে সিলেট বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন ছুড়েছেন, এই এলাকায় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পদধারী নেতাদের বাসস্থান। তারা কেনো প্রশাসনকে এসব ডেভিলদের অবস্থান সম্পর্কে জানান নি? হামলার আগে কেনো তারা নীরব ভূমিকায় ছিলেন? তাহলে কি ডেবিলদের পূনর্বাসন করা হচ্ছে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। সচেতন মহল এবং বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এখন আওয়ামী ডেবিলদের পুনর্বাসন করছে। প্রশাসনের গোয়েন্দা সংস্থার কাজ কি? তারা কেন ডেভিলদের আটক করছেনা। নাকি প্রশাসনে এখনো স্বৈরাচারী সরকারের পেতাত্নারা রয়েগেছে।
দ্বিতীয় দফা হামলার পর সিলেটের বিভিন্ন ইউনিটের বিএনপির নেতাকর্মীরা মধ্যরাতে ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে মাছিমপুর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা বা কাউকে আটক করা যায়নি।