1. jhramjan88385@gmail.com : bbarta :
  2. muhammadalomgir350@gmail.com : Muhammad Aaomgir : Muhammad Aaomgir
  3. abrahim111099@gmail.com : Bikal Barta :
স্বামীর দ্বারা নির্মমভাবে স্ত্রী খুন।  - Bikal barta
৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| শীতকাল| শনিবার| সকাল ৮:৫১|

স্বামীর দ্বারা নির্মমভাবে স্ত্রী খুন। 

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত সময় মঙ্গলবার, মে ২১, ২০২৪,
  • 175 জন দেখেছেন

রহমত উল্লাহ ।

নীলফামারী জেলার ডিমলা থানার শালহাটি নাউতারা নামক গ্রামে স্বামীর দ্বারা নির্মমভাবে স্ত্রী খুন। যৌতুকের দাবী ও স্বামীর পরকিয়া আসক্তির কারণে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম মোছাঃ উম্মান সাদিয়া (৩৩)। নিহতের ঔরষের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে- সাদ (০৮), জুলকিফল (৪)। উম্মান সাদিয়ার বাবার বাড়ী রংপুর জেলার গংগাচড়া থানার পাকুড়িয়া শরীফ গ্রামে।
নিহত উম্মান সাদিয়া জনপ্রিয় লেখক ও গণমাধ্যম বিশ্লেষক ওমায়ের আহমেদ শাওন এর একমাত্র বড় বোন। তিনি বলেন, ‘পৃথিবী থেকে প্রস্থান সকলের জন্য বিষাদময়। তারপরও কিছু প্রস্থান মানুষের কলিজায় আঘাত করে। প্রিয় স্বজনদের বিদায় মেনে নেওয়া যায় না। তবুও নিয়তির নির্মমতার কাছে মানুষ চিরকাল অসহায়। আমার বড় আপু ব্যক্তিগত জীবনে নিজ এলাকা এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছে খুব ভালো মানুষ ছিলেন। সকলে তাঁর জন্য মর্মাহত এবং মাগফিরাত কামনা করেছেন। মহান আল্লাহ তা’আলা আমার আপুর জীবনের সকল গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন। আমিন। হত্যাকারী এবং সহযোগীগণের আল্লাহ কঠিন বিচার করুন।” পাশাপাশি তাঁর একমাত্র বড় বোনের নাজাতের জন্য দেশবাসীর নিকট দোয়া কামনা করেছেন।”
প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে দুজনের বিয়ে হয়। পরে উক্ত দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের বিবাহ মেনে নেয়। উম্নান সাদিয়া লিটনের রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা থেকে শুরু করে ব্যাংকের চাকুরী হওয়া পর্যন্ত সহযোগীতা সহ সংসারের যাবতীয় খেদমতে নিবেদিত প্রাণ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ইতিপূর্বে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে উম্নান সাদিয়ার ছোট ভাই মুনকাদের রহমান সৌরভ তাকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা প্রদান করেন। এছাড়াও লিটনকে বিভিন্ন সময়ে নগদ কয়েক লক্ষ টাকা, কয়েক ভরি সোনা দেওয়া হয়। লিটন ও তার পরিবার সেসবের বিনিময়ে কৃতজ্ঞতা টুকুও প্রকাশ করেনি। প্রেমের বিবাহের কারণে তাদের দাম্পত্ত্য জীবন চলাকালে লিটন ও তার পরিবারের কিছু লোকজন অকারণে কলহ-বিবাদ সৃষ্টি করে। অতঃপর উম্নান সাদিয়ার পরিবার থেকে টাকা নিয়ে নতুন বাড়ী তৈরীর কাজ শুরু করে-। একেক সময় একেক পরিমাণ যৌতুকের দাবীতে লিটন উম্মান সাদিয়াকে মারপিট ও অত্যাচার করে। এবং ডিমলা থানার অদূরে এক ধূর্ত ডিভোর্সপ্রাপ্ত মহিলা আরজিনা খাতুন আঁখি (পিতা- মোঃ আব্দুল, মাতা- আহেমা খাতুন) এর সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত হয়।

নিহতের স্বামী জাহিদুল ইসলাম লিটন (৩৬) নিজ বাড়ীতে ১৭.০৫.২০২৪ ইং তারিখে  রাত ১২:০০ টার পর পরিকল্পিত ভাবে কয়েকজন খুনের সহযোগীতা সহ এ নির্মম হত্যাকান্ড সম্পন্ন করেন বলে বোঝা যায়।

জাহিদুল ইসলাম লিটন পেশায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেড পিএলসি ডিমলা শাখার জুনিয়র অফিসার। তার এগারো ভাই-বোনের মধ্যে সে সবচেয়ে ছোট। হুকুমদাতা হিসেবে তার ভাই মোঃ আশরাফুল -কে অভিযুক্ত করেছেন নিহতের পরিবার। লিটন বিভিন্ন সময় উম্মে সাদিয়ার পরিবারের সদস্যদেরকে মানহানি সহ হত্যার হুমকি ও বিভিন্ন হয়রানি সংকেত দিয়ে আসছে-। মান-সন্মানের ভয়ে নিহতের পিতা ও মাতা বিষয়গুলো চেপে গেছে। অনেক সময় অনুরোধের মাধ্যমে সমাধানও করা হয়েছে। অপরাধ করতে করতে খুনি লিটন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ, মারধর সহ ইমোশনাল টর্চার করে। ছোট ছোট অপরাধে পার পাওয়ার অভ্যস্ত হয়ে গেলে মানুষ বড় ধরণের অপরাধে ধাবিত হয়-। সেটাই আরেকবার প্রমাণ হয়ে গেলো উম্মান সাদিয়া খুনের মাধ্যমে।
আনুমানিক রাত ১২ টার পর জাহিদুল ইসলাম লিটন নিহতের পিতাকে মোবাইল ফোনে জানায়, ‘আপনার মেয়ে অসুস্থ; তাকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে নিবো নাকি আপনার বাসায় নিবো?’ নিহতের পিতা বলেন, ‘অসুস্থ্য হলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে- বাসায় নয়।’ লিটনের আরেক ভাই রেজাউল করিম জানায়, ‘আপনার মেয়ে ষ্ট্রোক করেছে।’ কিছুক্ষণ পর জাহিদুল ইসলাম লিটন আবার নিহতের পিতাকে জানায়, ‘আমার ছেলেদের মুখের দিকে দেখিয়া আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।’

নিহতের ফুফাতো ভাই রুহুল বাহার রবি, নিহতের ভাতিজা ইবনে সিনা মিরাজ ও আজমিরুজ্জামান জয়, নিহতের ছোট ভাই মুনতাছির রহমান সজীবদেরকে মৃত্যুর ভিন্ন ভিন্ন কারণ উল্লেখ করে ফোনের মাধ্যমে জানায়।
১৭.০৫.২০২৪ ইং তারিখে রাত ০২:২০ মিনিটে রংপুর মেডিকেল হাসপাতাল এর জরুরী বিভাগে ভর্তি করে (ভর্তির পূর্বে নিহতের পরিধান কৃত গহনা খুলে নেয়) খুনি লিটন ও তার ভাই আশরাফুল পালিয়ে যায়। তারপর আদিব, ইমতিয়াজ আহমেদ জাহিদ, আজমিরুজ্জামান জয়, শাহিদ বকশি, ইবনে সিনা মিরাজ সহ আরও কয়েকজন স্বজন উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা পায়।

পরবর্তীতে ১৮.০৫.২০২৪ ইং তারিখে নিহতের পিতা মোঃ হেফজুর রহমান স্বজনদের নিয়ে ডিমলা থানায় উপস্থিত হয়ে এজাহার (ডিমলা থানার মামলা নং-১৮) দায়ের করেন। ডিমলা থানার ওসি দেবাশীষ কুমার রায় সেটি গ্রহন করেন।

১৮.০৫.২০২৪ ইং তারিখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “মুখমন্ডলে কালো ছাপ, ডান হাতের কনুইয়ের উপড়ে কালোশিরা দাগ, গলায় ১৩-১৪ ইঞ্চি কালোশিরা দাগ (চিকন রশি দিয়ে টানা), হাত দুটি ছড়ানো (ভেঙে দেওয়া)।” তাতে প্রাথমিক ভাবে প্রমাণ হয়- এটি আত্মহত্যা নয় বরং খুন সংক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বাদ আসর নিহতের জানাজায় অসংখ্য মানুষ (পরিবার, আত্বীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত-অপরিচিত, শুভাকাঙ্খীগণ) সমবেত হয়েছিলো।

১৯.০৫.২০২৪ ইং তারিখে পরিবারবর্গ নিহতের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন, ‘আল্লাহ তা’আলা যেন তাঁর সকল গুনাহ সমূহ ক্ষমা করতঃ শহিদী মর্যাদা দান করে জান্নাতে দাখিল করেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024 bikal barta
error: Content is protected !!