সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো::সিলেট মহানগরীর শাহ্পরান (রহ:) থানার আওতাভুক্ত সিসিক’র ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ নং ওয়ার্ড জুয়া ও মাদকের নিরাপদ স্বর্গরাজ্যে। বিগত ২০ বছর যাবৎ শাহপরান বি আই ডিসি মীরমহল্লা এলাকার মৃত ইসলাম উদ্দীন এর ছেলে, নুরু মিয়া, সামাদ মিয়া এবং তাদের বোন জামাই সাহাবুদ্দিন সহ গুটিকয়েকজন মাদক ব্যবসা করলেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মরণ নেশা মাদক বিক্রেতার সংখ্যা। বর্তমানে ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ নং ওয়ার্ডে অনেকেই দলবদ্ধ সিন্ডিকেট করে প্রকাশ্যে দিবালোকে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে, ফলে ঐ এলাকায় ঘটছে হত্যার মতো অনাকাংখিত ঘটনা। তারই জেরে গত কয়েক বছরে ঐ এলাকায় খুন হয়েছে ৫ জন তবুও বন্ধ হয়নি মরণ নেশার ব্যবসা। এসব মাদক ব্যবসা বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি এসএমপি।
স্থানীয়দের অভিযোগ পুলিশের গুটিকয়েক অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই চলে এসব অবৈধ ব্যবসা ফলে ঐ এলাকার যুবসমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই উঠতি বয়সী যুবকদের মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে স্থানীয়ভাবেও নেই কোন উদ্যেগ। ফলে ঐ এলাকার যুবসমাজ দিন দিন বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এখনই প্রশাসনিক ও সামাজিক ভাবে মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে না পারলে যে কোন সময় অনাকাংখিত খুনের আশংকা রয়েছে।
মাদকের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে, ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন সিলেটর সভাপতি, স্থানীয় সাংবাদিক তালাশ টিভি ডট লাইভ এর শাহপরান থানা প্রতিনিধি মইন উদ্দীনকে, মাদক ব্যবসায়ীরা টানাহেছরা করে এবং প্রান নাশের হুমকি সহ, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আব্দুস সামাদ নামের এক মাদক ব্যবসায়ী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সামাদগংদের ছত্র-ছায়ায় মাদক ব্যবসা পুরো এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিঠিয়ে আছে। এমনকি রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক সরবরাহ করে আসছে সামাদগংরা।
মীর মহল্লার ভেতর পয়েন্টে দেকানে বসে, বি আই ডিসি রোড পয়েন্টে, খাদিমপাড়া ৬ নং রোডের শেষ মাথায় মন্টু মিয়ার বাড়ীর পাশের দোকানে বসে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে হেঁটে, মোবাইল ফোনে ইয়াবা, গাজা, ফেনসিডিল সহ বিদেশী মদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নুরু, সামাদ ও সাহবুদ্দিন নামের মাদক ব্যাবয়ী চক্র। এলাকাবাসীর তথ্য মতে, ইয়াবা ব্যবসায়ী নুরু, বিগত সময়ে কয়েকবার মাদক নিয়ে ধরা পড়ে, জেল হাজতে গিয়েছে। তার নামে ৫ থেকে ৭টি মাদক মামলা রয়েছে। মাদকের এতোগুলো মামলা থাকার পরও প্রকাশ্যে দিবালোকে মাদক বিক্রি করে অথচ পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।
অপরাধ বিশ্লেসক ও সচেতন মহলের প্রশ্ন এদের খুঁটির জোর কোথায়? নাকি প্রশাসনের মাঝে ঘাপটিমেরে বসে কেউ তাদের অবৈধ মাদক ব্যবসায় শেল্টার দিচ্ছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় নুরু, সামাদ ও শাহাবুদ্দিন আওয়ামীলীগ সরকারের ধূসর। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী নেতাদের ছায়া তলে দাঁড়িয়ে তাদের ব্যবসা চলমান রেখেছিল। জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে, আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ত্যাগ করার পর সামাদ, নুরু এবং শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদকবিরোধী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন খাদিমনগর ও মীর মহল্লা গ্রামের সাধারণ জনগণ। তারপরও থেমে নেই তাদের মাদক ব্যবসা।
২০২৪ইং সালের জুলাই মাসে মাদক সেবন ঝগড়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে মাদক বিক্রি বন্ধ করতে ৩৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এর নেতৃত্বে এলাকাবাসী মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে মাদকের আস্তানা খ্যাত মীরমহল্লা এলাকায় গিয়ে সামাদ,নুরু ও শাহাবুদ্দিন এর দোকান ও বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। এই ঘটনায় হতবাক হয়ে স্ট্রোক করে সামাদের চাচী মারা যায়। মাদক ব্যবসায়ীরা সেই ঘটনাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে স্থানীয়দের উপর হত্যা মামলা দায়ের করে।
মাদক ব্যবসায়ী সুচতুর সামাদ হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে টাকা দিয়ে লোক এনে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে স্থানীয়দের উপর মিডিয়ার মাধ্যমে চাপসৃষ্টি করে তাদেরকে আপুষে বাধ্য করে বলে অভিযোগ রয়েছে । এই কাজের মাধ্যমে তাহার উভয়কূল রক্ষা হয়। একদিকে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়, অন্যদিকে এলাকার মানুষের সাথে আবার সম্পর্ক তৈরি হয় এবং পুনরায় নিরাপদে মাদক ব্যবসা চালানো সহজ হয়।
বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে বিআইডিসি এলাকার মূকুটহীন ভূমিখেকো ও টিলাখেকো সম্রাট আনোয়ার হোসেন ওরফে মামা খন্দকারের মধ্যস্থতায় হত্যা মামলাটি বড় অংকের টাকার বিনিময়ে আপুষ হয়। এলাকাবাসীকে বুঝানো হয়েছে পুলিশি হয়রানী ও হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে হলে সবাইকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।
সুশীল সমাজের মতে, এই মাদকচক্রকে প্রতিহত করা না হলে, দেশের যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে যাবে। তাই এই মাদকচক্র কে দমন করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছে খাদিমনগর ও মীর মহল্লা গ্রামের সাধারণ জনগণ।
বিআইডিসি এলাকার মাদকের বিষয়ে জানতে এসএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) দক্ষিণ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সময় টিভি বাংলাকে বলেন আমি নতুন এসেছি এব্যপারে আমার কিছু জানা নেই।
বিআইডিসি এলাকার মাদকের বিষয়ে জানতে এসএমপির শাহপরান (রহ:) থানার অফিসার ইনচার্জ মনির হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সময় টিভি বাংলাকে বলেন আমি জানি মঈন উদ্দিন নামের এক সাংবাদিক লেখে, পরে আমি ফোর্স পাঠালে তাদের আর পাওয়া যায়নি। মহিলা হত্যা মামলার বিষয়ে বলেন এটা আমি জানি মামলা চলমান। ঘটনা মাদক সংক্রান্ত ছিলো জানতে চাইলে তিনি বলেনএব্যপারে আমার কিছু জানা নেই। হত্যা মামলার বিষয়ে জানি।
এব্যপারে সাংবাদিক মঈন উদ্দিন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন এই বিআইডিসি বহর কলোনী বিশেষ করে শাহপরান মাজার ৩৩,৩৪ ও ৩৫ নং ওয়ার্ডের মাদক, টিলা কর্তন এবং সরকারী জমি অবৈধভাবে ভোগদখল করে স্টাম্পের মাধ্যমে বিক্রির বিষয়ে সরকারী সব সংস্থাকে যেমন বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর, সদর উপজেলা ইউএনও, সহকারী কমিশনার ভূমি, শাহপরান থানা ও তহশীলদারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি কিন্ত কোন কাজ হয়না, বরং আমার উপর নির্যাতন ও মেরে ফেলার হুমকি চলে আসে। এমন কি আমকে মেরে ফেলতে কয়েকবার আটকানো হয়েছে। আপনার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই যে কোন সময় বিআইডিসি বহরকলোনী এলাকার ভূমিখেকো, টিলাখেকো, মাদকব্যবসায়ীরা আমাকে মেরে ফেলতে পারে। যদি আমি মরে যাই তাহলে আমার মৃত্যুর জন্য ওরাই দায়ী থাকবে। আপনারা ন্যায় বিচারে কাজ করবেন বলে অগ্রিম বলে রাখছি।