মন্জুরুল আহসান শামীম
স্টাফ রিপোর্টারঃ তিস্তা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন,পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “তিস্তার পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বহু বছর ধরে যে অব্যবস্থা চলছে, তার ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া আজ নদীভাঙনে হাহাকার করছে মানুষ। এটা শুধুই প্রকৃতি না, এটা অব্যবস্থাপনার ফল।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে দুই দিনের সফরের অংশ হিসেবে কাউনিয়া উপজেলার পাঞ্জরভাঙ্গা এলাকার তিস্তা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা। এলাকাবাসীর দুর্দশা ও দীর্ঘদিনের অবহেলার কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেন টেকসই বাঁধ নির্মাণ, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখা এবং সীমান্ত-সংলগ্ন নদীগুলোর পানিবণ্টনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন,” তিস্তা মহাপরিকল্পনা একটি বৃহৎ পরিকল্পনা। পূর্বের তিস্তা পাড়ের মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিস্তা পাড়ের মানুষের মতামতের ভিত্তিতে চীনের সাথে পরামর্শ সাপেক্ষে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন,এই সরকার ২০২৬ সালের মধ্যেই এ কাজ শুরু করতে পারবে। ভবিষ্যতে যেন তিস্তা পারে মানুষের আর কোন ভাঙ্গনের শিকার হতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই পরিকল্পনা চলমান রয়েছে।“পরিবেশ রক্ষার নামে যেসব প্রকল্প হয়, সেখানে স্থানীয়দের অংশগ্রহণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা উপেক্ষা করা হয়। এটা পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি আরও জানান, নদীভাঙনের ফলে শুধু ঘরবাড়ি নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যনিরাপত্তা ও চরম হুমকিতে পড়েছে। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঢাকা এর মহাপরিচালক এনায়েত উল্লাহ, রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ইসলাম, রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড এর প্রধান প্রকৌশলী, মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, রংপুরের উপ সচিব মোবাশশিরুল ইসলাম, কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মহিদুল হক সহ জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। নদী ভাঙনরোধে চলমান ও সম্ভাব্য প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়েও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা।
পরে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান চৌধুরী সড়কপথে কুড়িগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন।