স্টাফ রিপোর্টার:
দুর্নীতিবাজ ও লুণ্ঠনকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জনমনে যখন ক্ষোভ তুঙ্গে, তখন কাস্টমস কমিশনার মোঃ মাহবুব জামানের কানাডায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার খবর দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত শত শত কোটি টাকার সম্পদ গঠনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মাহবুব জামান দীর্ঘদিন ধরে কানাডায় পরিবারসহ পাড়ি জমাবার পরিকল্পনা করে আসছিলেন। ইতোমধ্যে তার স্ত্রী, তিন সন্তান এবং ছোট ভাই কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন। কানাডায় তিনি কিনে রেখেছেন চারটি বিলাসবহুল বাড়ি, যার মধ্যে তিনটি সন্তানদের নামে এবং একটি ছোট ভাইয়ের নামে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি হুন্ডির মাধ্যমে তার ছোট ভাইয়ের মারফত শত শত কোটি টাকা কানাডায় পাচার করেছেন। কানাডায় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সমরেশ দাসকে দেওয়া এক ব্যক্তিগত স্বীকারোক্তিতে তিনি নিজেই নাকি জানিয়েছেন, কত টাকা পাঠিয়েছেন, সেই হিসেব তিনি নিজেও জানেন না।
ঢাকাতেও তার রয়েছে বিপুল সম্পত্তি। বসুন্ধরা, গুলশান, উত্তরা ও মোহাম্মদপুরে রয়েছে একাধিক প্লট ও অ্যাপার্টমেন্ট। এসব সম্পদ কীভাবে অর্জিত হয়েছে, সে বিষয়ে রয়েছে বহু প্রশ্ন। ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এক দুর্নীতির অভিযোগ এখন দুদকের তদন্তাধীন।
সূত্র জানিয়েছে, মাহবুব জামান সম্প্রতি ঢাকা উত্তরের এক কথিত রাজনৈতিক ‘সমন্বয়কারীর’ সাথে আঁতাত করে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিময়ে ঢাকা-টরন্টো ডাইরেক্ট ফ্লাইটে কানাডায় পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তার টার্গেট করা দিনটি হলো আগামী রোববার।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি এই ব্যক্তি দেশত্যাগে সফল হন, তাহলে তার লুণ্ঠিত সম্পদ পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এমন একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার দেশ ত্যাগ প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।
জনমনে প্রশ্ন—এই লুটেরা যদি দেশ ছাড়ে, তাহলে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা কি তবে চিরতরে হারিয়ে যাবে? দুদক, ইমিগ্রেশন বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি জনগণের দাবি, অবিলম্বে তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক এবং তার পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়া হোক।