মোঃ শহিদুল ইসলাম (স্টাফ রিপোর্টার):মামলার বাদী জনাব হারুন-উর রশিদ গত ০২-০৭-২০২৫ খ্রি. দিবাগত রাত্রী বগুড়া সদর থানায় এই মর্মে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যে, কিছুদিন পূর্বে ঢাকা জেলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মোবাইল নম্বর ০১৭৬৭-৯৮৩২৩৭ ব্যবহারকারী ব্যাক্তির সাথে মামলার সাক্ষী দ্বয়ের পরিচয় হয়। সে সময়ে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে উক্ত মোবাইল নম্বর ধারী ব্যাক্তি নিজেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের চাচাতো ভাই পরিচয় দিয়ে তার নাম ব্যারিস্টার শামীম রহমান বলে জানায়। সে বেশির ভাগ সময়ে ঢাকায় অবস্থান করে বলেও জানায়। সে কেন্দ্রের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সহিত যোগাযোগ করিয়া ভালো পদ-পদবী দিতে পারবে বলে তাদের আশ্বস্ত করে। পরবর্তীতে গত ২২/০৬/২০২৫ খ্রি. বিকাল অনুমান ০৫.৩০ ঘটিকার সময় মোবাইল নম্বর ০১৭৬৭-৯৮৩২৩৭ হইতে উল্লেখিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের চাচাতো ভাই পরিচয় দানকারী ব্যারিস্টার শামীম রহমান ফোন দিয়ে সাক্ষী মোঃ ইমরান হোসেন ও মোঃ গোলাম রব্বানী জায়েদারদ্বয়কে বগুড়া সদর থানাধীন মম-ইন কফি শপের সামনে যাইতে বলে এবং তাদেরকে দলের পদ-পদবী নিয়ে কথা বলবে মর্মে জানায়। সাক্ষী মোঃ ইমরান হোসেন ও মোঃ গোলাম রব্বানী জায়েদারদ্বয় সন্ধ্যা অনুমান ০৬.৩০ ঘটিকার সময় উক্ত কফি শপের সামনে গেলে ব্যারিস্টার শামীম রহমান নামধারী ব্যাক্তি আলাপচারিতার এক পর্যায়ে ১নং সাক্ষী ইমরান হোসেনকে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় যুবদলের পদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা দাবী করে এবং ২নং সাক্ষী মোঃ গোলাম রব্বানীকে জেলা যুবদলের পদ দেওয়ার কথা বলিয়া তার কাছে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা দাবী করে। তখন আলাপচারিতা শেষে সাক্ষী মোঃ ইমরান হোসেন ও মোঃ গোলাম রব্বানী জায়েদারদ্বয় তাহাকে যথাক্রমে নগদ ৩০,০০০+২০,০০০/- সর্বমোট=৫০,০০০/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে সাক্ষীদ্বয় বিভিন্ন মারফতে খোঁজ নিয়ে জানিতে পারে যে, উক্ত মোবাইল ব্যাবহারকারী ব্যারিস্টার শামীম রহমান নামে জনাব তারেক রহমানের কোন চাচাতো ভাই নেই এবং উক্ত মোবাইল নম্বর ০১৭৬৭-৯৮৩২৩৭ ব্যাবহারকারী ব্যাক্তি নিজেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের চাচাতো ভাই পরিচয় দিয়ে বগুড়া জেলা সহ বিভিন্ন জেলায় ফোন এবং ম্যাসেজ দিয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের এবং প্রশাসনের বিভিন্ন সিনিয়র অফিসারের নিকটে পদ এবং পোস্টিং এর কথা বলিয়া টাকা দাবি করে আসছে। এ সংক্রান্তে বগুড়া সদর থানার মামলা নং-০৯, তারিখ-০৩/০৭/২০২৫ খ্রি, ধারা-৪১৯/৪২০ রুজু হয়।
উক্ত মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার, বগুড়া মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় এসআই মোঃ আবু জাফর ও এসআই মোঃ জাহাঙ্গীর কবির এর নেতৃত্বে বগুড়া ডিবির একটি চৌকস দল নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ০৩/০৭/২০২৫ খ্রি. সকাল ০৭.০০ ঘটিকার সময় ডিএমপি ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানাধীন উত্তরা ৪নং সেক্টরের মাটির মসজিদ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করিয়া উক্ত মোবাইল সিমসহ আসামী মোঃ শামীম রহমান(৩৩), পিতা-মৃত লিল মিয়া, মাতা-মৃত ময়না বেগম, সাং-নিশিন্দারা কারবালা, থানা ও জেলা-বগুড়াকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকালে ধৃত আসামীর হেফাজত হইতে ডজন খানেক বিভিন্ন কোম্পানীর সিম কার্ড, ০২টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের ০৪ টি এটিএম কার্ড ও ধৃত আসামীর নিজ নামীয় বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে নিজেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব মোঃ তারেক রহমান এর চাচাতো ভাই ভূয়া ব্যারিস্টার শামীম রহমান পরিচয় দিয়ে আসছিলো মর্মে স্বীকার করে।
প্রকাশ থাকে যে, ধৃত আসামীকে উল্লেখিত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ্দ করা হইবে।