ভোলা প্রতিবেদক-
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে উপজেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে কিছুদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও পুনরায় শুরু হয়েছে দেদারছে বালু উত্তোলন, দিনে রাতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তেতুলিয়ায় অবৈধভাবে বালু কাটছে কতিপয় অসাধু বালু খেকোরা। তেতুলিয়ায় কোনো বালু মহাল না থাকলেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে বছরের পর বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে বেড়েছে নদী ভাঙন। আর এতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর জীববৈচিত্র্য। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে উপজেলার তেতুলিয়া নদীর বোরহানউদ্দিন খালের মাথায় হাসের চর সংলগ্ন এলাকায় গেলে স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানান বিগত দিনগুলোতে ইউএনও স্যারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে কিছুদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। এখন আবার পুনরায় শুরু হয়েছে বালু উত্তোলন।
এদিকে উপজেলার ভূমি অফিস সূত্র জানায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রণজিৎ চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে একটি অভিযান পরিচালনা করে একই দিন বিকেলে বালু উত্তোলন দায়ে তিনজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ও অনাদায়ে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এ সময় দুটি ড্রেজার মেশিন ও একটি বলগেট জব্দ করা হয়। তবে নামমাত্র এ অভিযানে সন্তুষ্ট নয় বলে জানান স্থানীয়রা।
এতে কার্যত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হবে না বলে জানান উপজেলার সাচরা ইউনিয়নের বাসিন্দা আইউব আলী, জামাল হোসেন, আকবর সহ তেতুলিয়া নদীর চরাঞ্চলের চাষাবাদ কারী কয়েক জন। তারা আরো জানান, দিনে রাতে সমান তালে ১০/১৫ টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলার তেতুলিয়া নদীর সীমানায় এসে বাণিজ্যিক কাজে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা। আমরা চরাঞ্চলে চাষাবাদ করে কোনরকম চলি, অবৈধভাবে এ সমস্ত বালু উত্তোলন করার কারণে আমাদের কৃষিজমি ভেঙ্গে যাচ্ছে, প্রশাসনের কাছে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই, জেল জরিমানায় বালু উত্তোলন কোনভাবেই থামবে না, বিগত দিনও তা হয়নি, এসিল্যান্ড স্যারের এরকম লোক দেখানো অভিযান দেখে মনে হয়, বালু খেকোদের কাছ থেকে উনি মোটা অংকের অর্থ নিয়েছেন। এ সকল নাম মাত্র অভিযান আমরা চাই না।
এবিষয় জানতে বোরহানউদ্দিন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রণজিৎ চন্দ্র দাসের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলো তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানান, তেতুলিয়া নদীতে কোনো বালু মহাল নেই। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কারীদেরকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থান রয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের লালমোহনও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় বেশ কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানা এবং বলগেট জব্দ করা হয়েছে। শীঘ্রই অবৈধ বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে রিপোর্ট লেখা অবদি তেতুলিয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার দায় ভ্রাম্যমাণ আদালত মো. টিপু ও মো. মনির দুই লক্ষ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং মো. ফয়সাল নামের এক লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।